সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন

জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও উৎসবমুখর করতে বিজিবিকে প্রস্তুতির নির্দেশ

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৮ Time View

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে প্রশিক্ষণসহ যা যা করা দরকার সে প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বিজিবি দিবস-২০২৫ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস : কৃতিত্বপূর্ণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ পদক প্রদান এবং খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বেশি দিন নেই। যথাসম্ভব ৪৫ দিন আছে। এই নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর করতে প্রশিক্ষণসহ যত ধরনের প্রস্তুতি নিতে হয় তা গ্রহণ করতে হবে বিজিবিকে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, নির্বাচনকে উৎসবমুখর করার বড় দায়িত্ব কিন্তু বিজিবিকে নিতে হবে। এই দায়িত্ব আপনারা (বিজিবি) খুব ভালোভাবে পালন করবেন। জাতিকে একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেবেন তারা, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বক্তব্যের শুরুতে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজিবির অপরিসীম সাহস ও আত্মত্যাগের কথা গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি। পাশাপাশি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতার সঙ্গে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আত্মোৎসর্গকারী সব শহীদকে স্মরণ করেন, যাদের আত্মদানে উন্মোচিত হয়েছে শোষণ ও বৈষ্যমহীন দেশ গড়ার নতুন পথ। তিনি আন্দোলনে আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী সব অকুতোভয় ছাত্র-জনতাকে স্মরণ করেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বিজিবি এক সুদীর্ঘ ও গৌরবময় ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। আজকের বিজিবি এক ‘ত্রিমাত্রিক’ বাহিনী হিসেবে দেশের সীমান্ত সুরক্ষা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা ও জনকল্যাণমূলক কাজে অনন্য ভূমিকা রাখছে। বিজিবির উন্নয়নে সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জাতীয় স্বার্থকে সমুন্নত রেখে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় অতন্ত ন্যায়ানুগ পন্থায় নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

তিনি বলেন, সীমান্ত দিয়ে কোনো মাদক প্রবেশ করবে না। স্পর্শকাতর এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত সতর্কতা আনয়ন করতে হবে। সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে দেশীয় কোনো পণ্য বিদেশে পাচার হবে না।

মাদক ও চোরাকারবারির সঙ্গে জড়িত থাকলে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, যেসব কর্মকর্তা/কর্মচারী চোরাকারবারি ও মাদক পাচারকারীদের সহায়তা করে কিংবা সাহায্য করে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কাউকে কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া যাবে না।

অধীন কমান্ড/ট্রুপসদের কল্যাণে সর্বদা খেয়াল রাখাসহ সজাগ এবং সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা সমাধানে অত্যন্ত কৌশলী ও যোগ্যতার পরিচয় দিতে হবে। দেশের স্বার্থ শতভাগ রক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, একটা জিনিস খেয়াল রাখবেন, ডিসিপ্লিন, ট্রেনিং অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার সাইড বাই সাইড চলতে হবে। ট্রেনিং বা ডিসিপ্লিনের ক্ষেত্রেও কোনো ধরনের কম্প্রোমাইজ করা যাবে না। শুধু নিজের ওয়েলফেয়ারের দিকে খেয়াল রাখলে চলবে না, আন্ডার কমান্ডের ওয়েলফেয়ারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাদের সমস্যা শুনতে হবে, দ্রুত সম্ভব সমাধান করতে হবে।

স্বরাষ্ট উপদেষ্টা বলেন, সীমান্ত ব্যবহারকারী চোরাকারবারিদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সীমান্তে প্রয়োজনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে কোনো অপরাধী, সন্ত্রাসী সীমান্ত দিয়ে পলায়ন করতে না পারে সে বিষয়ে কঠোর সতর্কতা অবলম্বন করার নির্দেশ দেন তিনি।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, ‘চেইন অব কমান্ড’-এর প্রতি পূর্ণ আস্থা ও আনুগত্য বজায় রাখবেন। সীমান্ত রক্ষার পবিত্র দায়িত্বের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার যেকোনো দায়িত্ব সততা, নিষ্ঠা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে পালন করবেন।

তিনি বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে বাংলাদেশের মানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে বিজিবি তার গৌরবময় অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ অন্য কর্মকর্তা ও বিজিবি সদস্যরা।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category