শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:৩৫ অপরাহ্ন

সিডনিতে হয়ে গেল “অগ্রণী স্কুল এন্ড কলেজে”এর প্রাক্তন ছাত্রীদের মিলনমেলা

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৪ মার্চ, ২০২৪
  • ২২৩ Time View

প্রথমবারের মত অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী অগ্রণী স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন ছাত্রীরা নারী দিবসকে সামনে রেখে ২রা মার্চ সিডনীর ওয়ারিক ফার্মের হলিডে ইনের একটি মনোরম কনফারেন্স ভেন্যুতে আয়োজন করে পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের ।
সকাল এগারোটা থেকে প্যাস্টেল কালারের মিষ্টি শেডে সজ্জিত হয়ে অগ্রণীর মেয়েরা উপস্থিত হতে থাকে অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। ক্যানবেরা, মেলবোর্ন, ব্রিসবেন, তাসমানিয়া থেকে আসেন অনেকেই প্রাণের টানে।

শুরুতে মনোরম নাস্তার ব্যবস্থা করে অগ্রণীয়ানরা, সাথে থাকে চা-কফি । হলে প্রবেশপথেই শুরুতেই সারিতার আঁকা স্কুলের করিডরের ছবি সবাইকে নস্টালজিক করে তোলে। ঠিক দুপুর বারোটায় স্কুলের ঘণ্টার সাথে শুরু হয় অগ্রণীর প্রথম পুনর্মিলনী উৎসব। বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেলিয়ার জাতীয়সংগীতের পর উপস্থাপিকা সূচনা চৌধুরী এবং শ্রাবন্তী কাজী সবাইকে স্বাগত জানান। বেইলীরোডের দুর্ঘটনায় হতাহত ও অগ্রণীর গত শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রী এবং কর্মীদের জন্য এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সূচনালগ্নে অগ্রণীর মেয়েরা গেয়ে ওঠে কবি গোলাম মোস্তফার প্রাথর্না সংগীত “অনন্ত অসীম প্রেমময় তুমি”। অগ্রণী স্কুলের স্মৃতির ডালা মেলে ধরেন ড. জেসমিন শফিক-তাঁর স্মৃতিতে মুক্তিযুদ্ধের আগে এবং পরে অগ্রণীর চিত্র ফুটে ওঠে। রেকর্ডকৃত ভিডিও বার্তায় অগ্রণীর মেয়েদের শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান এবং স্মৃতি রোমন্থন করেন অগ্রণীর প্রাক্তন দুইজন শিক্ষক-নূরুন নাহার এবং রুবী আকরাম। শিল্পী অমিয়া মতিনের নেতৃত্বে অগ্রণীর মেয়েরা গেয়ে ওঠেন চমৎকার কোরাস- কোন পুরাতন প্রাণের টানে, পুরানো সেই দিনের কথা, We shall overcome, এই মুখরিত জীবনের চলার বাঁকে এবং আশ্বিন ফাগুন মাসে। একক সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী অমিয়া মতিন, শাফিনাজ আমিন এবং ড. মাফরুহা আলম। গীটারে ছিলেন সোহেল খান, তবলা এবং অকটোপ্যাডে জিয়াউল ইসলাম তমাল এবং কীবোর্ডে রাফসান জামান। জীবনান্দ দাশের কবিতা আবৃত্তি করেন মহসীনা পারভীন। নারীর ক্ষমতায়নকে কেন্দ্র করে বিশেষ থিম -Empower, connect and share অংশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী গীতিনৃত্যনাট্য হতে “আমি চিত্রাংগদা” গানটির সাথে বলিষ্ঠ নাচ পরিবেশন করেন সৈয়দা মাহ-ই-মুনীর। “আমরা অগ্রণীয়ান” নাটকটি অন স্ক্রীন শুভ মুক্তি হয় যা দর্শকরা অত্যন্ত উপভোগ করেন। নাটকের স্ক্রিপ্ট,পরিচালনা, ক্যামেরা, সিনেমাটোগ্রাফি, এডিটিং করেন ড. মাফরুহা আলম। নাটকে অভিনয় করে ভূয়সী প্রশংসা কুড়ান সৈয়দা সুলতানা, নাইয়ারা কেয়াসি, ড. তনিমা আলী, শুকতি সারিতা এবং সৈয়দা মাহ-ই-মুনীর।

এছাড়া শিক্ষা এবং নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদানের জন্য সম্মাননা প্রদান করা হয় ড. জেসমিন শফিককে। বিভিন্ন স্টেট থেকে আগত অগ্রণীর মেয়েদের প্রদান করা হয় Certificate of appreciation. নারীভিত্তিক এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন অগ্রণীর চার প্রাক্তন শিক্ষার্থীর মা। পুনর্মিলনী আয়োজনের গল্পের শুরু বলেন আয়োজক নাজিয়া হাসান, সাদিয়া আফরিন তানিয়া এবং জেনিফার আহমেদ। আয়োজক ড. মাফরুহা আলম অনুষ্ঠানের সাথে সংযুক্ত কলাকুশলী সকলকে পরিচয় করিয়ে দেন এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অত্যন্ত সুস্বাদু লাঞ্চের আগে অগ্রণীর মেয়েরা আসন্ন নারীদিবস উপলক্ষ্যে কেক কাটে এবং ১৯৫৭ সাল থেকে নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রণী স্কুলের ভূমিকায় আনন্দ প্রকাশ করে। লাঞ্চের পর সত্তরের দশক হতে একবংশ শতাব্দী পর্যন্ত জনপ্রিয় ইংরেজী, হিন্দী এবং বাংলা গানের ছন্দে অগ্রণীর মেয়েরা হারিয়ে যায় কৈশোরের আনন্দে। ঠিক তিনটা পঞ্চাশ মিনিটে হাসতে হাসতে গাইতে গাইতে অগ্রণীর মেয়েরা পুনরুজ্জীবিত হয়ে বাড়ির পথে পা বাড়ায়। মিলনমেলা শেষ হয়, কিন্তু তার রেশ থাকবে আরো বহুদিন।

News Desk

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category