আগামী ৬ আগস্ট (বুধবার) থেকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে। একইসঙ্গে পরবর্তী তিন মাস শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থার উন্নয়নে কাউন্সেলিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
রোববার (৩ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জিয়াউল আলম।
তিনি বলেন, ওইদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস কার্যক্রম শুরু হবে। এরপর পরবর্তী অবস্থা বিবেচনায় বাকি ক্লাসগুলো চালুর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ঘটনার ভয়াবহতা কাটিয়ে শিক্ষার্থীদের ধীরে ধীরে শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরিয়ে আনতে আমরা ধাপে ধাপে কাজ করছি। এখনো আমরা নিয়মিত ক্লাস শুরুর অবস্থায় যাইনি। আগামীকাল (৪ আগস্ট) ক্লাস থাকলেও তা হবে মূলত কাউন্সেলিংভিত্তিক। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন, তাদের মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করবেন। কেউ যদি এখনও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকে বা আতঙ্কে থাকে, তাহলে আমরা তাকে ব্যক্তিগত কাউন্সেলিংয়ে নিয়ে যাব।
অধ্যক্ষ বলেন, মূল পাঠদান কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ৬ আগস্ট (বুধবার) থেকে। এর আগে আমরা শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির সুযোগ দিচ্ছি। শিক্ষকদের নির্দেশনা অনুযায়ী, আগামীকাল আনুষ্ঠানিক ক্লাস নয়, বরং শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে প্রস্তুত করার একটি ধাপ হিসেবেই দিনটি কাজ করবে। এছাড়া কালকে (৪ আগস্ট) আমাদের একটি পূর্বনির্ধারিত পরীক্ষা রয়েছে। অধিকাংশ অভিভাবক চাচ্ছেন, শিক্ষার্থীরা যেন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তাদের মতে, শিক্ষা কার্যক্রমে ফিরে এলে শিক্ষার্থীরা দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে। গত এক সপ্তাহ ধরে আমরা অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানি, এই মুহূর্তে আমাদের পরিবারটি (মাইলস্টোন কলেজ) আহত এবং আমরা সবাই মানসিকভাবে কষ্টে আছি। আমরা সবার প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা এই কঠিন সময়ে আমাদের পাশে থেকেছেন।
জিয়াউল আলম বলেন, আমরা তাদের প্রত্যেকের নাম, পরিচয় ও ছবি যাচাই-বাছাই করে সংগ্রহ করেছি এবং আমাদের কলেজের ফেসবুক পেজ ও ওয়েবসাইটে একটি অফিসিয়াল তালিকা প্রকাশ করেছি। যারা এই সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্ত ছিলেন বা বিভিন্ন গুজব শুনছিলেন, আশা করি এই তালিকা তাদের প্রশ্নের উত্তর দেবে। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মচারী এবং অভিভাবকদের নিয়ে গঠিত এই পরিবারে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের সবাইকেই আমরা কলেজের অংশ হিসেবেই মনে করি। তবে এর বাইরেও কেউ কেউ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন—যেমন, বিমানের পাইলট বা পথচারী কেউ কেউ। তবে তাদের পরিচয় এবং কলেজের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক না থাকায় আমরা তাদের কলেজের ক্ষয়ক্ষতির আনুষ্ঠানিক পরিসংখ্যানে রাখিনি।
এই মুহূর্তে কোনো শিক্ষার্থী মিসিং (নিখোঁজ) নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা যেভাবে আমাদের পাশে ছিলেন, যে সহানুভূতি ও সহযোগিতা দেখিয়েছেন, তার জন্য আমরা আন্তরিক কৃতজ্ঞ। আমরা শুধু এটুকুই চাই—এই কঠিন সময়ে সবাই যেন ধৈর্য ও সহমর্মিতার সঙ্গে এগিয়ে আসেন এবং গুজব কিংবা অযাচিত আলোচনার বদলে বাস্তব সত্যের ওপর ভিত্তি করেই মূল্যায়ন করেন। এই মুহূর্তে আমাদের কোনো শিক্ষার্থী নিখোঁজ নেই।