সত্তরের দশকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ, জনপ্রিয় ও আধুনিক কবি মাকিদ হায়দার আর নেই। বুধবার (১০ জুলাই) সকাল ৯টা ৫ মিনিটে রাজধানীর উত্তরার নিজ বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
মাকিদ হায়দারের ছেলে আসিফ হায়দার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, দুপুর ২টা থেকে ২ঃ৩০মিনিটের মধ্যে তার বাবার মরদেহ সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নজরুল মঞ্চে নেওয়া হবে। সেখান থেকে সরাসরি নেওয়া হবে কবির গ্রামের বাড়ি পাবনায়। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে চিরঘুমে শায়িত করা হবে কবিকে।
২০১৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি মাকিদ হায়দার অনেকদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন।
কবি মাকিদ হায়দার ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর পাবনার দোহারপাড়া গ্রামের বিখ্যাত হায়দার জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাকিমউদ্দিন শেখ ও মা রহিমা খাতুন। বাবা মায়ের সাত ছেলে ও সাত মেয়ে। তিনি ছেলেদের মধ্যে ষষ্ঠ। তার ভাই রশীদ হায়দার, জিয়া হায়দার, দাউদ হায়দার, জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার সবাই দেশের সাহিত্য-সংস্কৃতির সাথে জড়িত।
তাঁর পরিবারের প্রত্যেকেই বাংলা ভাষায় প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিক। প্রত্যেকে স্বনামে পরিচিত।
তাদের মধ্যে প্রয়াত হয়েছেন বরেণ্য নাট্যকার জিয়া হায়দার ও রশিদ হায়দার। অপর ভাইদের একজন নির্বাসিত কবি দাউদ হায়দার। অন্যদের মধ্যে রয়েছেন জাহিদ হায়দার, আবিদ হায়দার ও আরিফ হায়দার। তারাও সাহিত্য-সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত।
পাঁচ দশক ধরে সাহিত্যে একটানা ভূমিকা রেখে গেছেন মাকিদ হায়দার। তাঁর কবিতা লেখার নিজস্ব একটা ভাষা ছিল, আধুনিক ও পরিমিত সেই ভাষায় তিনি লিখেছেন অসংখ্য জনপ্রিয় কবিতা।
ছড়া দিয়ে তাঁর সাহিত্যচর্চার শুরু এবং গল্প ও নাটক লিখলেও শেষ পর্যন্ত তিনি কাব্যচর্চাই করেছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য লেখার মধ্যে রয়েছে, ‘যে আমাকে প্রেম শেখালো‘,’চন্দ্রাভিলাষী নারী’,’রোদে ভিজে বাড়ি ফেরা’ ‘আপন আঁধারে একদিন’ ‘রবীন্দ্রনাথ: নদীগুলা’ ‘বাংলাদেশের প্রেমের কবিতা’, ‘কফিনের লোকটা’, ‘ও প্রার্থ ও প্রতিম’ ‘প্রিয় রোকানালী’ ‘মমুর সাথে সারা দুপুর’।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
Leave a Reply