সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪২ পূর্বাহ্ন

বাঘের থাবায় ‘বাংলাওয়াশ’ পাকিস্তান

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৮ Time View

রাওয়ালপিন্ডিতে বজ্রসহ বৃষ্টির পূর্বাভাসে ৫ম দিনে খেলা মাঠে গড়ানো নিয়েই ছিল শঙ্কা। তবে পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তরের বরাত দিয়ে কিংবদন্তি ক্রিকেটার রমিজ রাজা জানালেন ‘খেলা হবে’। বাংলাদেশও স্বপ্ন দেখতে শুরু করল পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জয়ের। শেষ পর্যন্ত সেই স্বপ্ন সত্য হলো। বোলারদের অগ্নিঝরা বোলিংয়ের পর ব্যাটারদের সম্মিলিত প্রয়াসে বাংলাদেশ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে পেল ৬ উইকেটের দারুণ এক জয়।

পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট এলেই বাংলাদেশের স্মৃতিতে উঠে আসে মুলতান টেস্টে হারের দুঃসহ সেই স্মৃতি। দীর্ঘদিন পর সেই হারের ক্ষতে প্রলেপ দেয় রাওয়ালপিন্ডির প্রথম টেস্ট। ১০ উইকেটের বিশাল জয় প্রথমবার বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে টেস্টে পাকিস্তানকে হারানোর স্বাদ। এবার দ্বিতীয় টেস্টেও এলো অসামান্য জয়। দিনের শুরুতে দুই উইকেট হারালেও নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক আর মুশফিকুর রহিমরা ঠিকই দলকে নিয়ে যান ১৮৫ রানের ল্যান্ডমার্কে।

চতুর্থ দিনে পেসারদের দাপুটে পারফরম্যান্সের পর জয় ছিল সময় আর ধৈর্য্যের ব্যাপার। ৫ম দিনের দ্বিতীয় সেশনে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। শেষ দিনে টাইগার ব্যাটারদের ধৈর্য্য আর ‘কমিটমেন্টে’র সুবাদে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই। আবরার আহমেদের বলে চার মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব আল হাসান। পাকিস্তান ঘরের মাঠে নিজেদের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার এমন লজ্জার শিকার হয়েছে। এর আগে ইংল্যান্ডের কাছে ৩-০ ব্যবধানে হেরেছিল পাকিস্তান।

৫ম দিনে বাংলাদেশের ইতিহাস গড়তে দরকার ছিল ১৪৩ রান। আগের দিনের ৪২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে এদিন আরও ১৪ রান যোগ করেছিলেন দুই ওপেনার। ১০ ওভারে পার করেন দলীয় ৫০। এরপর কিছুটা বিপত্তি। মীর হামজার বলে ব্যক্তিগত ৪০ রানে বোল্ড হয়ে ফেরেন জাকির। জীবন পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি আরেক ওপেনার সাদমান। খুররমের বলে মিডঅফে আলতো শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন শান মাসুদের হাতে।

দুই উইকেট পতনের পর অধিনায়ক নাজমুল শান্ত আর মুমিনুল খেলেন নিখুঁত টেস্ট ইনিংস। ভেজা আউটফিল্ডের কারণে শুরুতে খানিকটা সংগ্রাম করতে হলেও শেষ পর্যন্ত ঠিকই নিজেদের খুঁজে পান বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক ও বর্তমান অধিনায়ক। ২০ ওভার খেলে দুজন যোগ করেন ৫৭ রান। ম্যাচটা ততক্ষণে পাকিস্তানের নাগালের বাইরে চলে যায়।

মধ্যাহ্নভোজের পর অবশ্য শান্ত বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ৩৮ রান করে সালমান আঘার বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দ্বিতীয় টেস্ট জিততে তখনো বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৮ রান।

এর আগে লিটন কুমার দাস এবং মেহেদি হাসান মিরাজের প্রথম ইনিংসে ১৬৫ রানের বিশ্বরেকর্ড জুটিটা টাইগারদের আত্মবিশ্বাস যোগায়। টেস্ট ক্রিকেটে ৫০ এর আগে ৬ উইকেট হারানোর পর ৭ম উইকেটে ১৬৫ রানের জুটি এর আগে কেউ করতে পারেনি। লিটন পেয়েছিলেন ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক। প্রথম ইনিংসে পাকিস্তানের ২৭৪ রানের জবাবে বাংলাদেশ গিয়েছিল ২৬২ পর্যন্ত।

১২ রানে পিছিয়ে থাকলেও ম্যাচে ফিরতে খুব একটা সমস্যা হয়নি। গ্যালারিতে বাংলাদেশের পতাকা উড়েছিল সিরিজের শুরু থেকেই। শেষ পর্যন্ত সিরিজ শেষে উঁচুতেই থাকল লাল-সবুজের সেই পতাকা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category