গাজা অভিমুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার যাত্রী আলোকচিত্রী, মানবাধিকার কর্মী ও দৃকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমকে আটক করা হয়েছে।
সমুদ্রপথে গাজা অভিমুখী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা থেকে তাকে আটক করে ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী। গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলের অপকর্মের সহযোগী যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা শক্তিগুলো তাতে সরাসরি সহায়তা দিচ্ছে বলে এক ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেন আটককৃত শহিদুল আলম।
এর আগে এক ভিডিও বার্তায় তিনি দৃঢ় কণ্ঠে জানিয়েছিলেন, তারা অবশ্যই গাজায় পৌঁছাবেন এবং ইসরায়েলি হামলায় কোনোভাবেই পিছপা হবেন না।
আটকের খবর জানিয়ে ভিডিও বার্তায় শহিদুল আলম বলেন, ‘আমি শহিদুল আলম, বাংলাদেশের একজন আলোকচিত্রী ও লেখক। আপনারা এই ভিডিও দেখছেন মানে, আমরা সমুদ্রে আটক হয়েছি এবং ইসরায়েলের দখলদার বাহিনী আমাকে অপহরণ করেছে। গাজায় গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য পশ্চিমা শক্তি সক্রিয়ভাবে সহায়তা দিচ্ছে। আমি আমার সব সহযোদ্ধা ও বন্ধুদের প্রতি ফিলিস্তিনের মুক্তির সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাই।’
এরআগে গত বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ফ্রিডম ফ্লোটিলার ওপরের ডেক থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে ভিডিও বার্তায় শহিদুল আলম বলেন, ‘আমরা গতকাল ঝড়ের কবলে পড়েছিলাম। তবে এখন ঝড় কিছুটা কমেছে। ক্যাপ্টেন দ্রুতগতিতে জাহাজ নিয়ে ঝড়ের আগে নিরাপদ স্থানে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিলেন। আমরা বর্তমানে ফ্লোটিলার শেষ অংশে রয়েছি। আমাদের আগে যেসব নৌযান ছিল, তারা ইতোমধ্যে গাজার কাছাকাছি চলে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল রাতে ইসরায়েলি হানাদাররা আক্রমণ চালিয়েছে। তবে আমরা এখনো সেই স্থানে পৌঁছাইনি। সমুদ্রে একটি তুরস্কের নৌযান দেখেছিলাম, যদিও তারা দূরে অবস্থান করছিল। আজ আমরা আরও কাছাকাছি যাবো। অবশ্যই গাজায় পৌঁছাবো। ইসরায়েলি হামলায় আমরা কোনোভাবেই পিছপা হবো না।’
শহিদুল আলম জানান, ‘সমুদ্র এখনো উত্তাল এবং ঝড়ের আশঙ্কা রয়েছে। তবে সকাল থেকে বৃষ্টি ও বিদ্যুতের ঝলকানি কমে এসেছে। আমরা আমাদের পথেই এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা অবরোধ ভাঙব। ফিলিস্তিন মুক্ত হবে।’
ফ্রিডম ফ্লোটিলা হলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকারকর্মীদের উদ্যোগ, যাদের লক্ষ্য ইসরায়েলের আরোপিত অবরোধ ভেঙে সরাসরি গাজায় ত্রাণ ও সহায়তা পৌঁছানো।
সেপ্টেম্বরে স্পেন থেকে প্রায় ৪৫টি জাহাজ নিয়ে গঠিত ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহর যাত্রা শুরু করেছে এবং এতে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন দেশের মানবাধিকারকর্মী, রাজনীতিক ও সাংবাদিকরা। যেখানে আছে প্রায় ৪৫টি জাহাজ নিয়ে গঠিত ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নৌবহর। তাদের মধ্যে সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও আছেন। ইসরায়েলি জলসীমায় পৌঁছার পর তাদের সবাইকে আটক করে হানাদার ইসরায়েলী বাহিনী।