সোমবার, ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৮ পূর্বাহ্ন

বন্যায় বাংলাদেশ-ভারত-থাইল্যান্ডে নিহত অন্তত ২০

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট, ২০২৪
  • ২৩ Time View

বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলা, প্রতিবেশি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় অন্তত ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। তিন দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় লাখ লাখ মানুষ আটকা পড়েছেন। স্থানীয় উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা ভুক্তভোগীদের উদ্ধারে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি ও মার্কিন বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায় গত কয়েকদিন ধরে রেকর্ড ভারী বৃষ্টিপাত চলছে। ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় বুধবার পর্যন্ত কেবল এই রাজ্যেই প্রাণহানি ঘটেছে অন্তত ১১ জনের। এছাড়া হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে ঠাই নিয়েছেন। এছাড়া এখনও লাখ লাখ মানুষ বন্যায় আটকা রয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় ভূমিধসের ঘটনাও ঘটেছে। একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলাতেও।

ত্রিপুরায় নিহত ১১ জনের মধ্যে অন্তত সাতজন পানির স্রোতে ভেসে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন। আর বাকি চারজনের প্রাণ গেছে ভূমিধসে। মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি বলছে, উজানে অবস্থিত ভারতের সাথে বাংলাদেশের অভিন্ন নদীগুলোর পানি লোকালয়ে ঢুকে আকস্মিক বন্যা তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশেও ৪ জন নিহত হয়েছেন।
বুধবার রাজধানী আগরতলা-সহ কয়েকটি অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের পর ত্রিপুরার আবহাওয়া বিভাগ লাল সতর্কতা জারি করেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ দু’দিনের জন্য স্কুল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে।

বৃষ্টি ও উজানের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নেমে আসা ক্রমবর্ধমান পানির ঢলে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চল বিধ্বস্ত হয়েছে। কুমিল্লা, ফেনী ও নোয়াখালীর মতো কয়েকটি জেলায় বিদ্যুৎ বা সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় বন্দরনগরী চট্টগ্রামের মহাসড়কের একটি বড় অংশ ডুবে যাওয়ায় রাজধানী ঢাকার সাথে যান চলাচল কঠিন হয়ে পড়েছে।
বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, দেশের পূর্ব, উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের অনেক নদীতে পানির স্তর ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রায় এক ডজন স্বেচ্ছাসেবক টেলিফোনে এপিকে বলেছেন, বন্যা কবলিত অনেক এলাকায় যোগাযোগের ব্যবস্থা না থাকায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধারে রীতিমতো লড়াই করছেন। দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলেছে, বন্যার কারণে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

এছাড়া এশিয়ার আরেক দেশ থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলে মৌসুমী ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় অন্তত পাঁচজন নিহত হয়েছেন। দেশটিতে বন্যায় ২ হাজার হেক্টরের বেশি কৃষিজমি প্লাবিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের সরকারি কর্মকর্তারা বলেছেন, বন্যায় হাজার হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রা চিয়াং রাই, নান ও ফায়াও প্রদেশের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সহায়তা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। দেশটির দুর্যোগ প্রতিরোধ ও প্রশমন অধিদপ্তর বলেছে, বন্যায় ২ হাজার ৫২ হেক্টর কৃষিজমি ধ্বংস হয়েছে এবং ১২ হাজার ৭৭৭টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভারতে বন্যায় ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ত্রিপুরায়। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা বলেছেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ ও বাস্তুচ্যুতদের ত্রাণ সহায়তার দিকে মনোনিবেশ করছি।” কর্তৃপক্ষ ত্রিপুরায় ৩০০টিরও বেশি ত্রাণ শিবির স্থাপন করেছে। যদিও বাস্তুচ্যুতদের সংখ্যা হাজার হাজার বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category