অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে ‘বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জোরদারকরণ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সেমিনার আয়োজন করেন এফবিসিসিআই। এই আয়োজনে সহযোগী ছিল অস্টেলিয়ার ক্যানবেরায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং সিডনিতে অবস্থিত বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল। সেমিনারে সঞ্চালনায় ছিলেন মিস তাহলিল দিলাওয়ার মুন।
এই সেমিনারে বাণিজ্য জোরদারের পাশাপাশি দেশের সম্ভাবনাময় খাতগুলোতে অস্ট্রেলিয়ান ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ চেয়েছে দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআই।
এফবিসিসিআই আয়োজিত সেমিনারে সংগঠনের সহ-সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ান বিনিয়োগকারীদের শিল্প কারখানা স্থাপনের পাশাপাশি সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা পরিচালনায় সব ধরনের সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে এফবিসিসিআই।
ড. যশোদা জীবন দেব নাথ বলেন, বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে বাণিজ্যের ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও এখনও সেভাবে সুযোগ কাজে লাগানো হচ্ছে না। বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এখনও বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি ওষুধ শিল্প, আইটি পরিষেবা, কৃষি প্রযুক্তি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষাসহ গুরুত্বপূর্ণ খাতে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া যৌথ উদ্যোগের সম্ভাবনার ওপর জোর দেন।
বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ান বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে ড. যশোদা জীবন দেবনাথ বলেন, দক্ষতা, প্রযুক্তি ও জ্ঞানের আদান-প্রদানসহ উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য অস্ট্রেলিয়ার সহযোগিতা চায় বাংলাদেশ।
এ সময় বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়ানো এবং বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে দুই দেশের মধ্যে একটি সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সিইপিএ) বা একটি আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি (আরটিএ) সম্পন্নের প্রস্তাবও দেন তিনি।
চট্টগ্রাম ও সিডনির মধ্যে সরাসরি শিপিং রুট চালুর আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআই ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, এটি বাস্তবায়ন করা গেলে দুই দেশের ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে। এর ফলে ব্যবসায়ীদের পণ্য পরিবহন ও লজিস্টিকস বাবদ খরচ যেমন কমবে, তেমনি প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে।
এ সময় তিনি আইসিটি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও উদ্ভাবন খাতে যৌথ উদ্যোগে গবেষণা এবং উন্নয়ন তহবিল গঠনের প্রস্তাব করেন।
সেমিনারে এফবিসিসিআই মহাসচিব মো. আলমগীর বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকার প্রদত্ত সুযোগ ও প্রণোদনাগুলো তুলে ধরেন।
নিউ সাউথ ওয়েলস সরকারের স্মল বিজনেস, ল্যান্ড অ্যান্ড প্রোপার্টি বিষয়ক মন্ত্রী স্টিফেন ক্যাম্পের অস্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা তুলে ধরেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশি বিনিয়োগকারীদের অস্ট্রেলিয়ায় বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার এম আল্লামা সিদ্দিকী, সিডনি কনসাল জেনারেল মো শাখাওয়াত হোসেন, বাংলাদেশের হাকমিশনের রাজনৈতিক কাউন্সিলর ও দুতালয় প্রধান মিস তাহলিল দিলাওয়ার মুন ও কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মিস রনি চাকমা, এফবিসিসিআই পরিচালক মো. রাকিবুল আলম, মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ, প্রীতি চক্রবর্তী, হাফেজ হাজী হারুন অর রশীদ, কাউসার আহমেদ, সৈয়দ মো. বখতিয়ার, মোহাম্মদ আফতাব জাবেদ, অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশ বিজনেস ফোরামের সভাপতি আব্দুল খান রতন পরিচালক মোজ্জামেল বাবু, উপদেষ্টা হোসেন কবির, নাইম আবদুল্লাহ এবং বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য ব্যবসায়ীসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply