প্রচণ্ড গরমে পুড়ছে ফিলিপাইন। নজিরবিহীন তাপপ্রবাহে জনজীবনে নাভিশ্বাস ওঠায় দেশটির সরকার কিছু এলাকার স্কুলে ক্লাস বন্ধের পাশাপাশি লোকজনকে বাড়ির বাইরে বেশি সময় না থাকার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছে। দেশটির নাগরিকরা বলছেন, গরম এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে, নিশ্বাস নেওয়াই কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
ফিলিপাইনে সাধারণত মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসে সবচেয়ে গরম ও শুষ্ক আবহাওয়া বিরাজ করে। কিন্তু এ বছর এল নিনোর ধাঁচের আবহাওয়ার কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
দেশটির রাজধানী ম্যানিলার দক্ষিণের ক্যাভিট প্রদেশের সমুদ্রতীরবর্তী এক রিসোর্টে কাজ করেন ৬০ বছর বয়সী এরলিন তুমারন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘‘এখানে এত গরম যে, আপনি শ্বাস নিতে পারবেন না।’’ মঙ্গলবার দেশটিতে তাপমাত্রা রেকর্ড ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পৌঁছায়।
‘‘আমাদের পুলগুলো এখনও খালি। এটা বেশ আশ্চর্যজনক। আপনি আশা করছেন, লোকজন এসে সাঁতার কাটবে। কিন্তু মনে হচ্ছে, তারা গরমের কারণে বাড়িঘর ছেড়ে বের হতে নারাজ।’’
ফিলিপাইনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসবিষয়ক সংস্থা বলেছে, বুধবার দেশটির অন্তত ৩০টি শহর ও পৌরসভায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি ‘‘বিপজ্জনক’’ স্তরে পৌঁছাতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সংস্থাটি তাপে আর্দ্রতা বিবেচনা করে তাপমাত্রা কেমন অনুভূত হয় তা পরিমাপ করে।
দেশটির সরকারি এই সংস্থার প্রধান জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আনা সোলিস বলেন, আগামী দিনগুলোতে তাপদাহ তীব্র আকার ধারণ করার সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ। এএফপিকে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির বাইরে কাটানো সময় সীমিত করতে হবে। এছাড়া প্রচুর পানি পান করতে হবে, বাইরে যাওয়ার সময় ছাতা এবং টুপি সঙ্গে রাখতে হবে।’’
তিনি বলেন, এল নিনোর কারণে চরম তাপদাহ চলছে; যা দেশের বিভিন্ন অংশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। দেশটির প্রায় অর্ধেক প্রদেশই আনুষ্ঠানিকভাবে খরার মাঝে রয়েছে।
মঙ্গলবার ফিলিপাইনের উত্তরাঞ্চলীয় আপারি পৌরসভায় ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার রেকর্ড করা হয়েছে; যা দেশের সর্বোচ্চ। বুধবার এই তাপমাত্র ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার দেশটিতে বাতাসের প্রকৃত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
Leave a Reply