শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৩:১৩ অপরাহ্ন

গানের ঝরনাতলায়’ প্রতীতির শ্রোতার আসর: দুই পর্বে আবেগ ও সুরের মেলবন্ধন

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৫ Time View

সিডনির আরমিংটন কমিউনিটি সেন্টারে ২২ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬:৩০টা। বাংলা সাংস্কৃতিক সমাজের মানুষের পদচারণায় সেদিন প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে প্রতীতির ‘গানের ঝরনাতলায় শ্রোতার আসর’—যা এবারের আয়োজনের গভীরতা ও আবেগে হয়ে উঠেছে স্মরণীয়।

প্রথম পর্ব নিবেদন করা হয়েছে সদ্য প্রয়াত মরমী শিল্পী ফরিদা পারভিনকে শ্রদ্ধা জানিয়ে।
মঞ্চে রাখা ছবিতে ফুটে ওঠা তাঁর পরিচিত হাসিমাখা মুখ আর শ্রোতাদের নীরবতায় ছিল গভীর শ্রদ্ধা ও বেদনার প্রতিফলন।

এই পর্বে প্রতীতির নিজস্ব শিল্পী ও দুজন অতিথি শিল্পী সংগীত পরিবেশন করেন। নির্বাচিত গান গুলো শ্রোতাদের মনে করিয়ে দেন মহান শিল্পী ফরিদা পারভিন শুধু সুরের সাধিকা নন, তিনি ছিলেন বাঙালির সাংস্কৃতিক আবেগের এক স্থায়ী ঠিকানা। তাঁর অকাল প্রস্থান সঙ্গীতে যে শূন্যতা তৈরি করেছে, তা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে অনুভব করেন নীরবে। এই পর্বে গান পরিবেশন করে শরিফা সুলতানা,রোজলীন তুলি, মারিয়া মোস্তাইন, লারিনা নুপুর ও অতিথি শিল্পী ফারিয়া নাজিম ও আনিসুর রহমান ।

দ্বিতীয় পর্ব প্রতীতির নিয়মিত শিল্পীদের পরিবেশনা ‘গানের ঝরনাতলায়’ শ্রোতার আসর। এ পর্বে এবারের শিল্পী ছিলেন যথাক্রমে এ কে এম ফারুক , অনুপম গোস্বামী, মারিয়া মোস্তাইন এবং মিরোভা শারমিন ।তারা পরিবেশন করেন হারানো দিনের সব বাংলা গান। যা সকল শ্রোতাদের হৃদয়ে সুরের ছোঁয়া দিয়েছে ।তাদের সুললিত কণ্ঠে একের পর এক পরিবেশনায় সুর ও কথার ঝরনা যেন ভিজিয়ে দিয়েছিল হলঘরকে।অনুষ্ঠান শেষ হবার আগে সালেকীন ভাই মঞ্চে এসে বলেন,”এ যেন শেষ হইয়াও হইলো না শেষ কারন নতুন প্রজন্মের শিল্পী নিলাদ্রী চক্রবর্তী পুরোটা অনুষ্ঠানে দূর্দান্ত কিবোর্ড বাজালেও কোনো গান গায়নি।কেন নিলাদ্রী গাইবে না!”
তাই সালেকীন ভাই তাকে গান গাইবার অনুরোধ করেন। কোনো প্রস্তুতি ছাড়াই সে একটি গান পরিবেশন করে এবং সকল শ্রোতাদের ওয়ান মোর ওয়ান মোর অনুরোধে দ্বিতীয় গানটিও সে গায় । নিলাদ্রী আমাদের নতুন প্রজন্মের সম্পদ। প্রবাসে ওর গলায় বাংলা গান যেন আমাদের প্রাণে নতুন আশার সঞ্চার করে। আমাদের বাংলা ভাষা বাংলা গান প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে যাবে এই বিশ্বাসকে দৃঢ় করে ।
প্রতীতির তরুণ ও অভিজ্ঞ শিল্পীদের সমন্বয়ে এই পর্বটি ছিল ভীষণ প্রাণবন্ত। প্রতিটি পরিবেশনায় ছিল আত্মমগ্নতা ও আন্তরিকতা …যা ‘শ্রোতার আসরের’ প্রকৃত রূপ।
এই অনুষ্ঠানে যন্ত্র শিল্পীদের পরিবেশনাও ছিল দারুন উপভোগ্য।যন্ত্র সংগীতে ছিলেন গীটারে সোহেল খান, তবলায় শান্তনু কর, মন্দিরায় সুমিতা দে ও কীবোর্ডে নিলাদ্রী চক্রবর্তী। উপস্থাপনায় রুমানা ইসলাম।

দুই পর্বে বিভক্ত এই আয়োজন সিডনির সংগীত অনুরাগী বাঙালি সমাজকে স্মরণ করিয়ে দিল সংগীত শুধু বিনোদন নয়, এটি মানুষের স্মৃতি, কৃতজ্ঞতা, একতা ও অনুভবের এক মহামিলন। প্রতীতির উদ্যোগে সেই অনুভবই ফের প্রকাশ পেল নতুনভাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category