সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১০:০২ অপরাহ্ন

সিডনির ক্রোয়ডন পার্কে তাণ্ডব: নির্বিচারে গুলি চালিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি, ১৬ জন সহ একজন গুরুতর আহত, বন্দুকধারী গ্রেফতার

Reporter Name
  • Update Time : সোমবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৭৬ Time View

সিডনির পশ্চিম উপকণ্ঠের শান্ত আবাসিক এলাকা ক্রোয়ডন পার্ক রবিবার সন্ধ্যায় পরিণত হয় ভয়াবহ আতঙ্কের শহরে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এক ব্যক্তি হঠাৎ নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে নির্বিচারে গুলি চালাতে শুরু করেন। প্রায় পঞ্চাশ থেকে একশ রাউন্ড গুলি ছোড়ার পর পুরো এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে ভয়, আতঙ্ক আর চিৎকার।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় একজন পুরুষের গলা ও বুকে গুলি লাগে। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এছাড়া অন্তত ১৬ জন পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দা গুলির শব্দ ও ধ্বংসাবশেষে সামান্য আহত হন। গুলির আঘাতে একাধিক গাড়ি, বাড়ির জানালা ও দোকানের কাচ ভেঙে যায়।

পুলিশ খবর পেয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ট্যাকটিক্যাল অপারেশন ইউনিট, হেলিকপ্টার পোলএয়ার ও ডগ ইউনিট মোতায়েন করে। ক্রোয়ডন পার্ক ও আশেপাশের কয়েকটি রাস্তা অবরুদ্ধ করে এলাকা লকডাউন ঘোষণা করা হয়। পুলিশের আহ্বান জানানো হয় স্থানীয়দের ঘরে থাকতে এবং জানালা বন্ধ রাখতে।

প্রায় দুই ঘণ্টা উত্তেজনার পর রাত সাড়ে নয়টার দিকে ৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশ। তাঁকে গ্রেফতারের সময় সামান্য আহত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং পরবর্তীতে তাঁকে হাসপাতালের পুলিশ পাহারায় রাখা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে দুইটি লং-আর্ম রাইফেল ও গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, প্রাথমিক তদন্তে এটি সন্ত্রাস বা সংগঠিত গ্যাং হামলা বলে মনে হচ্ছে না। তবে বন্দুকধারীর উদ্দেশ্য এখনও পরিষ্কার নয়। তাঁর মানসিক অবস্থা, পূর্ব ইতিহাস ও অস্ত্রের বৈধতা সবই এখন তদন্তাধীন। ফরেন্সিক টিম ইতোমধ্যে গুলির দিকনির্দেশ, অস্ত্রের ধরণ এবং বুলেটের উৎস বিশ্লেষণ শুরু করেছে।

এই ঘটনার পর পুরো এলাকাজুড়ে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সাধারণত শান্ত এই উপশহরে এমন সহিংসতার ঘটনা অকল্পনীয়। এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, “হঠাৎ গুলির শব্দ শুনে মনে হচ্ছিল যুদ্ধ শুরু হয়েছে। গাড়ির জানালা ভাঙছিল, মানুষ দৌড়াচ্ছিল, আমি জীবনে এমন ভয় পাইনি।”

অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপের কারণে বড় ধরনের প্রাণহানি এড়ানো গেছে। মানসিক স্বাস্থ্যের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটনা থেকে পাওয়া আতঙ্ক স্থানীয় শিশু ও কিশোরদের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।

সিডনির মতো মহানগরে সম্প্রতি একের পর এক সহিংসতার ঘটনায় নাগরিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অস্ত্রনিয়ন্ত্রণ আইন কঠোর থাকা সত্ত্বেও ব্যক্তিগত গোপন অস্ত্রধারী ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত নাগরিকদের আচরণে জনজীবনের স্থিতি নষ্ট হচ্ছে।

ক্রোয়ডন পার্কের এ মর্মান্তিক ঘটনার পর পুলিশ তদন্ত অব্যাহত রেখেছে এবং স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করেছে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category