মঙ্গলবার, ২৫ মার্চ ২০২৫, ০৬:৩৮ অপরাহ্ন

বিশ্বাস

মোঃ শফিকুল আলম
  • Update Time : শুক্রবার, ১৫ মার্চ, ২০২৪
  • ৩৩৩ Time View

বর্তমান দুনিয়ায় বিশ্বাসের ধারনা প্রতিনিয়ত অবিশ্বাসে পরিনত হচ্ছে।বিশ্বাস তৈরী না হয়ে বরং ভুল বোঝাবুঝি এবং দূরত্ব তৈরী হচ্ছে। বিশ্বাসের ব্যাপারটি বর্তমান সময়ে ব্যক্তিগত মুনাফার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যা’হোক মনুষ্য সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রাক্কালেই মূলতঃ বিশ্বাসের ধারনার উৎপত্তি। তখন অবশ্য পারষ্পরিক বিশ্বাস এবং সবার বেঁচে থাকার সংগ্রামও পারষ্পরিক নির্ভর্শীল ছিলো। বিশ্বাস মৌলিকভাবেই অন্যের ইতিবাচক ফলাফল প্রাপ্তির প্রত্যাশাকে সম্পৃক্ত করে। আবার এই প্রাপ্তির প্রত্যাশা অবশ্য দ্বিপাক্ষিক (Reciprocal)। That happens two way.
বর্তমান বা আধুনিক জটিল সমাজে বিশ্বাস আর পূর্বের ন্যায় সহজভাবে কাজ করছেনা। বরং অধিক মাত্রায় চ্যালেজ্ঞ তৈরী করছে। একেবারেই ব্যক্তিগত স্বার্থ সংরক্ষণের নিশ্চয়তার ওপর বিশ্বাস নির্ভর করছে।
ফলে ‘সবকিছু নিজেই করবো’ সমাধানে সমাজের দিক পরিবর্তন ঘটেছে (DIY- Do It Yourself) এবং এটি এখন একটি পন্য বা প্রোডাক্ট হয়ে গেছে। It means ‘Do It Yourself’ is now a service like product. এই পন্য ডিজিটাল কিম্বা ফিজিকাল হতে পারে।
তবে এতে করে ব্যক্তি স্বাধীনতা তৈরী হচ্ছে। অন্যের ওপর নির্ভরশীলতা কমছে বটে। সাইকোলোজিকাললি অন্যের ওপর বিশ্বাস বা নির্ভর্শীলতা হারানোতে মানুষ ক্রমশঃ নিজের ওপরও বিশ্বাস হারাচ্ছে। এটি আবার জীবনের বৈপরীত্য বা প্যারাডক্স অব লাইফ।
এই বিশ্বাস হারানোতে বা বিশ্বাস উবে যাওয়াতে মানুষের জ্ঞানের মধ্যেও জটিলতা তৈরী হয়েছে। এর ফলে মানুষ অনেক সময়ে তাদের দীর্ঘ জীবনের প্রতি বিরক্ত বা অনাসক্ত হচ্ছে এবং এমনকি আত্মহননে প্রবৃত্ত হচ্ছে বা নিজেই নিজের জীবনাবসান ঘটাচ্ছেন। কিন্তু আমরা যদি যুক্তিনির্ভর এবং নির্মোহ আলোচনা করি আমাদের শারীরিক কিম্বা মানসিক বিপর্যয়ের জন্য জীবনকে দায়ী করতে পারিনা। এবং নিজেই নিজের জীবনের অবসান ঘটাতে পারিনা বা উচিত নয়।
আমরা বরং একে অপরের সাথে সম্পর্ক তৈরীর এবং সংরক্ষণে সাধারন নিয়ম তৈরী করি এবং তা’ অনুসরন করি। না, রীতি বা নিয়ম হবে পারষ্পরিক মেনে চলার; চাপিয়ে দেয়ার নয়। আমরা অবশ্য ফলাফল না ভেবে কাজটি করে থাকি।
আমাদের ইচ্ছা বা প্রত্যাশার সাথে নিয়তির/প্রকৃতির ইচ্ছা বা প্রত্যাশার তখন অমিল তৈরী হয়। এটা তখন নিজের দিকে এতো বেশী তীর্যকভাবে কেন্দ্রীভূত হয় যে নিজ স্বার্থের ওপর অন্যের স্বার্থ গৌন হয়ে যায়।
আবার এটিও নয় যে মানুষ তার নিজের স্বার্থ ত্যাগ করবে। নিজের স্বার্থ বিবেচনায় না রাখলে আবার ব্যক্তির উন্নয়ন ঘটেনা এটিও সত্য।
যা’হোক আমাদের এমন একটি উদ্দেশ্য আলিঙ্গন করা উচিত যাতে আমরা পারষ্পরিক সংযুক্ত থেকে সবার জীবনকে সম্মিলিতভাবে উপভোগ্য করতে পারি।
নিজের এবং অন্যের জীবনের ওপর আস্থা স্থাপন, নিজের জীবনে প্রাপ্ত অভিজ্ঞতা অন্যের সাথে মিলিয়ে নিয়ে একটি ব্যালেন্সড জীব যাপন বরং পারষ্পরিক বিশ্বাস তৈরী করতে পারে এবং সবার জীবন তখন রিওয়ার্ডিং হতে পারে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category