প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার বলেন, নতুন বছরের নতুন বই ছাপা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বই আমাদের কাছে আসতেও শুরু হয়েছে। নির্বাচনের আগেই অর্থাৎ জানুয়ারিতেই সকল শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই পৌঁছে যাবে। বই বিতরণ হবে জানুয়ারিতে আর নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে সেক্ষেত্রে নির্বাচন বই বিতরণে বাঁধা হবে দাঁড়াবে না। যথাসময়েই শিক্ষার্থীরা তাদের বই হাতে পাবে।
রোববার (২ নভেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘জেলা প্রশাসন মেধা বৃত্তি’- পরীক্ষার পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ডা. বিধান রঞ্জন রায় বলেন, ‘শীঘ্রই আপনারা শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেখতে পারবেন। আমরা উপজেলা ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ করবো। উপজেলায় যেগুলো খালি পদ আছে সেগুলোতে শিক্ষক পদায়ন করা হলে শিক্ষক সংকট দূর হবে।
তিনি বলেন, দেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্যা গুলো আমরা চিহ্নিত করে কাজ শুরু করেছি। তবে ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবে তারা যদি এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করে তাহলে ৫ বছর পর প্রাইমারি স্কুলের চেহরা বদলে যাবে। আমাদের সমাজে শিক্ষা নিয়ে যে ধারণা নিয়ে প্রচলিত আছে তা অনেকাংশে সঠিক নয়। শিক্ষায় শারীরিক ও মানসিক বিকাশ না ঘটলে শিশুরা এগুতে পারবেনা। শুধু পড়াশুনা করে ভাল মার্কস ও সার্টিফিকেট অর্জন করলেই হবেনা। পাশাপাশি বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের জন্য মুখস্থ বিদ্যার বাহিরের জগতের সাথে তাকে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। তা না হলে এসব কাগজের সার্টিফিকেট কোনো কাজে আসবে না। একইসাথে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশের জন্য খেলাধুলার বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, ছোটবেলা থেকে শিশুদের মাঝে মমত্ববোধ গড়ে তুলতে হবে। তাদেরকে পড়াশোনার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। শিশুদের মধ্যে খারাপ আচরণ দেখা দিলে একসময় সেটি মনে স্থায়ীভাবে বাঁসা বাঁধে। শিশুদের সামনে খারাপ আচরণ করা যাবে না। তাঁরা যা দেখবে তাই কিন্তু শিখবে। সেজন্য আমাদের শিশুদের সামনে সতর্কতার সাথে যেকোনো আচার-আচরণ করতে হবে। ভালো আচরণ করলে তাঁরা ভালো কিছু শিখবে। এছাড়াও একটি স্কুল কিভাবে পরিচালিত হয় তার উপরও নির্ভর করে শিশুদের নৈতিকতা। বিশেষ করে ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহন করলে শিশুরা নৈতিক শিক্ষা পায়। নৈতিক শিক্ষা ছাড়া একটা জাতি কখনও উন্নত হতে পারেনা।
আলোচনা সভার শুরুতে মহাগ্রন্থ আল কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন কোর্ট মসজিদের ইমাম হাফেজ মোহাম্মদ ইলিয়াস উদ্দিন এবং পবিত্র গীতা পাঠ করেন জ্যোতির্ময় সরকার কেশব। এছাড়াও মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া সেরা শিক্ষার্থীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন চতুর্থ শ্রেণিতে ৯৯ নম্বর পেয়ে ১ম হওয়া দোয়রাবাজার মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহ জাবিন তালুকদার ও মধ্যনগর উপজেলার হরিপুর নওয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য মুগ্ধ। শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন, দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়নাল আবেদীন৷ শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পক্ষে বক্তব্য রাখেন শহর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসরীন আক্তার খানম।
পরে, মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া ১০৬ শিক্ষার্থী, ২৪ জন শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ও ২১টি শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকদের হাতে নগদ টাকা, পুরষ্কার ও ক্রেস্ট বিতরণ করেন অতিথিরা।