নরসিংদীর রায়পুরায় র্যাব-১১ এর অভিযানে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র ও গোলাবারুদসহ ০৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (১নভেম্বর) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার চরাঞ্চল শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়দাবাদ এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে এলাকার সন্ত্রাসীরা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর চেষ্টা করে।
এই ঘটনায় র্যাবের প্রধান কার্যালয়ের পক্ষ থেকে দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, নরসিংদীর রায়পুরার সায়দাবাদ এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রায়শই বিভিন্ন গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এ বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর চরাঞ্চলে সংঘর্ষে সন্ত্রাসীদের গুলিতে একজন নিহত হয়, ৯ সেপ্টেম্বর রায়পুরায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ১জন নিহত এবং ১জন আহত হয়, ২০ জুলাই সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক নারী নিহত হয় এবং ২২ এপ্রিল নরসিংদীর সদর উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চল আলোকবালিতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের গুলিতে একজন নিহতের মতো ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাগুলো মূলত দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটে।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব আরও জানান , নরসিংদীর বিভিন্ন স্থানে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসীরা নানা ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে রায়পুরার চরাঞ্চলে আত্মগোপনে চলে যায়। যেহেতু রায়পুরার সায়দাবাদ এলাকাটি চরাঞ্চল বেষ্টিত তাই সহজে নিজেদের রক্ষা করতে ও আইনের চোখকে ফাঁকি দিতে সন্ত্রাসীরা সেখানে অস্ত্র, গোলাবারুদ মজুদ করে এবং সেখান থেকে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই দুর্গম এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান পরিচালনা করতে গেলে প্রায় সময়ে সন্ত্রাসীরা একত্রিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ অবস্থায় রায়পুরা চরাঞ্চলটি সন্ত্রাসীদের একটি অভয়ারণ্য পরিণত হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১১, নারায়ণগঞ্জ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল নিজস্ব গোয়েন্দা নজরদারি ও গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ১ নভেম্বর ভোর প্রায় ৫টার দিকে জেলার রায়পুরা উপজেলার সায়েদাবাদ এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানকালে ২ টি বিদেশী পিস্তল, ৫ টি একনলা বন্দুক, ১ টি দুইনলা বন্দুক, ২ টি এলজি, ১ টি পাইপগান, ৩ টি ম্যাগাজিন ও ৩৫ রাউন্ড গুলিসহ ৮ জনের একটি সন্ত্রাসীদলকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃহলো ১। মোঃ শফিক মিয়া (৩২) পিতা মোঃ ডালিম মিয়া ২। মোঃ মোস্তফা (৩৮) পিতা মৃত হাজী সামছুল মিয়া ৩। জাহিদ হাসান (১৭) পিতা মোঃ দুলাল মিয়া ৪। আয়নাল (৩৮) পিতা মৃত মহাজুদ্দিন ৫। মহিউদ্দিন হৃদয় (২২) পিতা মোঃ জাকের হোসেন ৬। মোঃ বাচ্চু মিয়া (৬২) পিতা মৃত আলী হোসেন ৭। কালু মিয়া (৬৯) পিতা মৃত আঃ সামাদ (টুক্কু) মিয়া এবং মোঃ বাছেদ (৪০) পিতা মৃত খলিল রহমান। সকলের বাড়ী রায়পুরা উপজেলার চরাঞ্চল সায়দাবাদে।
উপরোক্ত আসামীদের মধ্যে মোঃ শফিক মিয়া (৩২), মোঃ মোস্তফা (৩৮), জাহিদ হাসান (১৭), মোঃ বাছেদ (৪০) বাচ্চু মিয়া (৬২)র নামে ১টি করে হত্যা এবং মহিউদ্দিন হৃদয় (২২) এর নামে ১ টি হত্যা চেষ্টা মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, গ্রেফতারকৃত আসামিরা রায়পুরার চরাঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়ানোর লক্ষ্যে এই বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিজেদের হেফাজতে মজুদ করে রেখেছিল।