মুক্তিযুদ্ধের অপারেশন কিলোফ্লাইটের অন্যতম বৈমানিক ক্যাপ্টেন (অব.) সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীর উত্তম ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকলে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনে সকাল ৮টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি ছেলে তাপস আহমেদ নিশ্চিত করেছেন।
সাহাবুদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন।
বিমানবাহিনী সদরদপ্তরের এক বার্তায় জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে ৫টায় বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর ঘাঁটি বাশারে তার জানাজা হবে। সেখানে তাকে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। এরপর তার মরদেহ নিজ জেলা ফরিদপুর শহরে নিয়ে যাওয়া হবে এবং সেখানেই তার দাফন সম্পন্ন হবে।
বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে মরহুমের রূহের মাগফিরাত কামনায় সকলকে প্রার্থনা করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, ক্যাপ্টেন সাহাবুদ্দিন আহমেদ ছিলেন পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একজন বৈমানিক। মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য হাতে গোনা যে কয়জন বেসামরিক ব্যক্তি বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন, তিনি তাদেরই একজন।
অপারেশন কিলোফ্লাইটের সর্বমোট ৮৫টি অপারেশনের মধ্যে ১২টি অপারেশনে ছিলেন ক্যাপ্টেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম হামলায় অংশ নেন ৬ ডিসেম্বর। এদিন ক্যাপ্টেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ এবং ফ্লাইং অফিসার বদরুল আলম অ্যালুয়েট হেলিকপ্টারে নিয়ে সিলেট, মৌলভীবাজার, শেরপুর ও সাদিপুরের দুটি ফেরীঘাটে থাকা পাকিস্তানি অবস্থান ধ্বংস করেন।
৭ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন সাহাবউদ্দিন আহমেদ অ্যালুয়েট হেলিকপ্টারে করে সিলেটের শমসেরপুরে অপারেশন চালানোর সময় পাল্টা হামলার মুখে পড়েন। তবে তার বুদ্ধিদীপ্ততায় প্রাণে বেঁচে যান মুক্তিযোদ্ধারা। ৮ ডিসেম্বর সিলেট সার্কিট হাউসসহ বেশ কয়েকটি জায়গায় অপারেশন চালান সাহাবউদ্দিন আহমেদ।
সাহাবউদ্দিন আহমেদ দীর্ঘদিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর অবসরজীবন করছিলেন। এছাড়াও তিনি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের কমান্ড পাইলট হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।