পাকিস্তানে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত। কয়েকদিনের বন্যায় খাইবার পাখতুনখোয়ার অন্তত ৬১টি সরকারি স্কুল সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ৪১৪টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মোট ধ্বংসপ্রাপ্ত স্কুলের মধ্যে ৫২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাতটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং দুটি উচ্চ বিদ্যালয়।
দির লোয়ারে ভারী বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যার কারণে ১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ধ্বংস হয়ে গেছে, যা সর্বোচ্চ সংখ্যা। এরপর শাংলায় আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ধ্বংস হয়েছে।
একইভাবে, হরিপুরে সবচেয়ে বেশি ২৯টি স্কুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বুনের জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ১৭ টি স্কুল।
সরকারি তথ্যে আরও জানা গেছে, বুনের জেলায় বৃষ্টি ও বন্যার কারণে চারজন শিক্ষক এবং একজন স্টাফ নিহত হয়েছেন এবং আরও তিনজন শিক্ষক আহত হয়েছেন। তথ্যে দেখা গেছে যে দুর্যোগে চারজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে।
‘আমরা যে কোনো উপায়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাব।’ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ খালিদ ডনকে বলেন।
বলেন, সময় বাঁচাতে তারা প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড স্কুল স্থাপনের বিকল্প বেছে নেবেন কারণ এক বা দুই মাসের মধ্যে এই ধরনের কাঠামো তৈরি করা সম্ভব।
প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগটি ইতিমধ্যেই প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে ৫০টি প্রি-ফ্যাব্রিকেটেড স্কুল স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে। আগের পরিকল্পনা পরিবর্তন করে বন্যাদুর্গত এলাকায় এই ধরনের স্কুল স্থাপন করা হবে বলেও জানান তিনি।
শিক্ষা বিভাগের আরেক কর্মকর্তা ডনকে বলেন, প্রতিটি গ্রাম এবং পাড়ার কাউন্সিলে সরকারি স্কুলের অবকাঠামো বিদ্যমান ছিল, যে কারণে প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট দুর্যোগে শিক্ষা বিভাগকে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।
বলেন, ২০০৫ সালে হাজারা বিভাগে ভয়াবহ ভূমিকম্পে শত শত সরকারি স্কুল ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
এছাড়া সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় শিক্ষা বিভাগের অবকাঠামোও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল কারণ অনেক সরকারি স্কুল বোমা মারা হয়েছিল।
পাকিস্তানে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে গত কয়েকদিনের মেঘভাঙা বৃষ্টির ফলে আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা ৩৫০ ছাড়িয়ে যায়। শুধু খাইবার পাখতুনখোয়ায় মারা গেছেন অন্তত ৩২৮ জন।
সূত্র: ডন