গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় আরও অন্তত ৮৩ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এদের মধ্যে অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে মারা গেছেন অন্তত ৮ জন, যার মধ্যে শিশুও রয়েছে। এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
বুধবার (৬ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, মঙ্গলবার নিহতদের মধ্যে ৫৮ জন ছিলেন সহায়তা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে বের হওয়া সাধারণ মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে পরিচালিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (জিএইচএফ)-এর খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে যাওয়ার পথে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে তারা প্রাণ হারান।
দেইর আল-বালাহ শহর থেকে আল জাজিরার প্রতিবেদক হিন্দ খুদারি জানান, সহায়তা নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের প্রতিদিনই গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটছে। উত্তর গাজার জিকিম ক্রসিং সংলগ্ন একটি বিতরণ কেন্দ্র থেকে আহত বহু মানুষকে আল-শিফা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের অনেকের মাথা, গলা ও বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে—যা চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত জটিল।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো জিএইচএফ-এর কার্যক্রম এবং নিরাপত্তা ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এই সংস্থার সহায়তা নিতে গিয়ে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন ১,৫৬০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
এদিকে গাজায় মানবিক বিপর্যয় আরও প্রকট আকার ধারণ করছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা দুর্ভিক্ষের তীব্র শিকার হচ্ছেন।
৭৫ বছর বয়সী সালিম আসফুর বলেন, “আমি বহুদিন ধরে শুধু রুটি আর পানি খেয়ে টিকে আছি। ৮০ কেজি ওজন ছিল, এখন ৪০ কেজিতে নেমে এসেছে। চলাফেরা করতে ছেলের সাহায্য লাগে। রাফাহ থেকে খাবার আনতে ২০ কিলোমিটার হাঁটতে হবে, সেটা কি আমার পক্ষে সম্ভব?”
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় অপুষ্টি ও অনাহারে মারা গেছেন আরও ৮ জন, যাদের মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। চলমান যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে মারা গেছেন মোট ১৮৮ জন—এর অর্ধেকই শিশু।