আপনি একজন ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট হোন অথবা আপনার ক্যারিয়ারের মাঝামাঝিতে অবস্থান করেন না কেন সর্বত্রই চাকরির জন্য আপনাকে কঠিন প্রতিযোগিতার মুখোমুখি বা সম্মুখীন হতে হবে। সুতরাং, আপনি কীভাবে আজকের পরিবর্তনশীল চাকরির বাজারে নিজেকে যুগোপযোগী হিসেবে গড়ে তুলতে পারেন সে প্রসঙ্গে কিছু টিপস দেওয়া হলো। যেগুলো
জানলে আপনি খুব সহজে আপনার চাকরির জায়গাটা তৈরি করতে পারবেন। নিজেকে
যুগোপযোগী করে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
নিজেকে ব্র্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলুন:
আপনি যদি নিজেকে কার্যকরভাবে চাকরির মার্কেটে উপস্থাপন করতে চান তবে, আপনি কীভাবে এবং কোথায় ভ্যালু এড করতে পারবেন তা স্পষ্টভাবে বুঝতে হবে। আপনার কি কি দক্ষতা ও সক্ষমতা রয়েছে? আপনার কি কি দূর্বলতা রয়েছে? কীভাবে সেগুলু অতিক্রম করবেন? সে সম্পর্কে সচেতন হোন এবং তারপরে আপনার ব্র্যান্ডটি তৈরি করা শুরু করুন।প্রতিনিয়ত চর্চার মাধ্যমে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির সাথে সাথে আপনার সেক্টরের
বিশেষজ্ঞ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করুন। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিজের সেক্টরের প্রফেশনালদের সাথে যুক্ত হয়ে আপনার পরিচিতি বাড়ানো শুরু করুন, জব মার্কেটে পরিচিতি না বাড়ালে প্রতিযোগীতা মূলক বাজারে নিজেকে ব্যতিক্রমী হিসেবে উপস্থাপন করা কস্টকর হবে।
সমসাময়িক প্রযুক্তির ব্যবহার আয়ত্ব করুনঃ
আজকের চাকরি বাজারে প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য আপনাকে নতুন নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার জানতে হবে। আমরা বর্তমানে একটি প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্বে বাস করি এবং প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব হচ্ছে এবং আপনি যদি যুগের সাথে নিজেকে হালনাগাদ করতে না পারেন তাহলে প্রতিযোগিতা থেকে পিছিয়ে পরার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনার সেক্টরে কী কী প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় সে সম্পর্কে সম্যক ধারনা রাখুন এবং সেগুলু আয়ত্ব করার পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
নিজ নিজ সেক্টরের ট্রেন্ড পর্যবেক্ষন করুনঃ
আপনি যে সেক্টরে আছেন বা যে সেক্টরে যেতে আগ্রহী সে সেক্টরের গতিবিধি লক্ষ্য করুন কোন চাহিদাগুলু পূরণ হচ্ছে না, এবং সে সক্টরের চলমান উন্নয়নগুলি পর্যবেক্ষন করুন যাতে আপনি কোন কোন ক্ষেত্রে দক্ষকর্মী প্রয়োজন তার একটি পরিষ্কার ধারণা পেতে পারেন। তারপর, আপনার দক্ষতা ব্যবহার করে সে চাহিদাগুলি পূরণ করতে নিজেকে প্রস্তুত করুন।
নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি করুনঃ
বর্তমান যুগ হচ্ছে নেটওয়ার্কিং এর যুগ, যার নেটওয়ার্ক সমৃদ্ধ তিনি পেশাগত জীবনে ভাল করছেন। আপনারা যারা যে ফিল্ড এ ক্যারিয়ার গড়তে চান সে ফিল্ডের ফোরাম, সংগঠন বা কমিউনিটির সাথে যুক্ত হতে পারেন।যেমন কেউ এইচ আর ফিল্ড এ ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে এইচ আর এর বিভিন্ন ফোরাম বা সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকতে পারেন। তেমনি ভাবে মার্কেটিং, ব্র্যান্ড, সাপ্লাই চেইন যেই ফিল্ডে যেতে চান সেই ফিল্ড এর সংশ্লিষ্ট ফোরামের সাথে যুক্ত হতে পারেন, তাদের বিভিন্ন স্বেছাসেবক মূলক কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে
পারেন এবং তাদের বিভিন্ন ট্রেনিং, সেমিনারে অংশ গ্রহণ করে একদিকে যেমন সংশ্লিষ্ট
বিষয়ে জ্ঞান লাভ এবং দক্ষতা অর্জন করতে পারেন অন্যদিকে ঐ কমিউনিটির পেশাজীবীদের সাথে একটা সখ্যতা গড়ে তুলতে পারেন যা আপনাকে পেশাগত জীবনে অনেক ভাবে সহায়তা করবে, এমনকি তারা আপনাকে চাকুরী পেতেও সাহায্য করবে।
আপনার ভবিষ্যত পদক্ষেপ সম্পর্কে চিন্তা করুনঃ
আপনি হয়ত আপনার বর্তমান চাকরি নিয়ে সন্তুস্ট আছেন, কোন সমস্যা হচ্ছে না, তাই বলে নিসচিন্তে বসে থাকবেন না, কে জানে আগামীকাল হয়ত আপনার এই চাকরি থেকে চলে যেতে হবে। তাই সর্বদা মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকুন, অনলাইন জব পোর্টালে রাখা আপনার সিভিটি নিয়মিত আপডেট করুন, আপনি যে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা এবং সাফল্য অর্জন করছেন সেগুলু সিভিতে সংযুক্ত করুন, জব মার্কেট সম্পর্কে খোজখবর রাখুন, প্রফেশনাল হেড হান্টারদের সাথে যোগাযোগ রাখুন এবং আপনার আপডেট সিভি তাদের কে শেয়ার
করে রাখুন; যাতে করে আপনার চাকরি হঠাত চলে গেলে যেন সহজে নতুন আরেকটি চাকরি খুজে পেতে পারেন।
একটি পরিবর্তনশীল চাকরি বাজারে প্রাসঙ্গিক থাকার মূল চাবিকাঠি হ’ল সর্বদা নিজের দক্ষতা বৃদ্ধির চেস্টা করা। ব্যক্তিগত এবং পেশাগত উভয় ক্ষেত্রেই নতুন অভিজ্ঞতাকে জীবনে বড় হওয়ার সুযোগ হিসেবে গ্রহন করতে শিখতে হবে। উপরোক্ত টিপসগুলো মেনে চললে একজন ব্যক্তি যেকোন সেক্টরেই যুগোপযোগী থাকতে পারবেন, সেটা যতই প্রতিযোগিতামূলক হোক না কেন।
এসএম আহবাবুর রহমান
এইচআর প্রফেশনাল এন্ড ক্যারিয়ার কোচ
Leave a Reply