বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩৬ অপরাহ্ন

পাকিস্তানে সাঁড়াশি অভিযান, ৩০ সন্ত্রাসী নিহত

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৫
  • ১৫ Time View

পাকিস্তানের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার ওরাকজাই জেলায় তিন দিন আগে সেনাবাহিনীর ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর সেখানে ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে সেনা-পুলিশ যৌথ বাহিনী। সে অভিযানে ৩০ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে এক বিবৃতি এ তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর আন্তঃদপ্তর সংযোগ বিভাগ (আইএসপিআর)। সেখানে বলা হয়েছে, ৮ অক্টোবর ওরাকজাই জেলায় সেনাবাহিনীর ওপর হামলার পর গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সেখানে বড় আকারে নিরাপত্তা অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সেই অভিযানে কমপক্ষে ৩০ জন সন্ত্রাসীকে ‘নরকে’ পাঠিয়েছে সেনা-পুলিশ যৌথ বাহিনী।

“পাকিস্তানের ভূখণ্ড থেকে সন্ত্রাসবাদের শেকড় উপড়ে ফেলতে সেনাবাহিনী প্রতিজ্ঞাবদ্ধ”, বলা হয়েছে আইএসপিআরের বিবৃতিতে।

গত ৮ অক্টোবর বুধবার ওরাকজাই এবং পার্শ্ববর্তী জেলা কুররমের সংযোগ সড়কে সেনাবাহিনীর একটি গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে বন্দুক ও বোমা হামলা চালায় নিষিদ্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালিবান পাকিস্তান (টিটিপি)। এতে দুই সেনা কর্মকর্তা এবং ৯ জন সৈনিক নিহত হন।

নিহত দুই সেনা কর্মকর্তার নাম-পরিচয়-পদবী প্রকাশ করেছে আইএসপিআর। এরা হলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনাইদ তারিক এবং মেজর তায়াব রাহাত।

পুলিশ এবং আইএসপিআর সূত্রে জানা গেছে, ৭ এবং ৮  তারিখে ওরাকজাইয়ে অভিযান পরিচালনা করে সেনাবাহিনী। অভিযান ১৯ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়।

অভিযান শেষে আট অক্টোবর সকালে ওরাকজাই থেকে  ফিরে যাচ্ছিল লেফটেন্যান্ট কর্নেল জুনাইদ তারিক ও মেজর তায়াব রাহাতের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনীর সেই টিম। ওরাকজাই-কুররম সংযোগ সড়কে তাদের গাড়িটি ওঠার কিছুক্ষণ পর তাদের গাড়িবহরকে লক্ষ্য করে বন্দুক ও বোমা হামলা করে টিটিপি। এতে ঘটনাস্থলেই লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারিক ও মেজর রাহাতসহ নিহত হন ১১ জন সেনা, আহত হন আরও বেশ কয়েক জন।

টিটিপির সন্ত্রাসীরা আগে থেকেই ওই এলাকায় অবস্থান নিয়ে ছিল। সামরিক বাহিনীর গাড়ি নাগালের মধ্যে আসা মাত্র ব্যাপকভাবে গুলিবর্ষণ শুরু করে তারা। এর অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কে পুঁতে রাখা একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে বহরের দু’টি গাড়ি উড়ে যায়। দুই কর্মকর্তা একটি গাড়িতে ছিলেন। ভিন্ন গাড়িতে ছিলেন সেনারা।

এদিকে, ৯ অক্টোবর ওরাকজাইয়ের পাশাপাশি খাইবার পাখতুনখোয়ার অপর জেলা ডেরা ইসমাইল খানেও অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। সে অভিযানে ৮ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে আইএসপিআরের বিবৃতিতে।

২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর তারপর থেকেই আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী দুই পাকিস্তানি প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসী তৎপরতা ও হামলার নাটকীয় উল্লম্ফন ঘটেছে।

খাইবার পাখতুনখোয়া মূলত পাকিস্তানপন্থি তালেবানগোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তানের (টিটিপি) ঘাঁটি অঞ্চল। অন্যদিকে বেলুচিস্তানে ব্যাপকভাবে তৎপর বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। এ দু’টি গোষ্ঠীই পাকিস্তানে নিষিদ্ধ।

ইসলামাবাদভিত্তিক থিংকট্যাংক সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (সিআরএসএস) সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বিগত যে কোনো সময়ের তুলনায় ২০২৫ সালের ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত তিন মাসে পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংসতার হার বেড়েছে ৪৬ শতাংশ।

সিআরএসএসের তথ্য অনুযায়ী, জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৩২৯টি। এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন অন্তত ৯০১ জন এবং আহত হয়েছেন ৫৯৯ জন।

সূত্র : জিও নিউজ

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category