বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:১০ অপরাহ্ন

যুক্তরাষ্ট্রে গাধা-হাতির লড়াই শুরু

Reporter Name
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১২০ Time View

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। আমেরিকার পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ভার্মন্টে স্থানীয় সময় ভোর ৫টায় (গ্রেনিচ মান সময় ১২টায়) ভোট গ্রহণ শুরু হয়। ভোট গ্রহণ চলবে ১২ থেকে ১৪ ঘণ্টা।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্য ও ডিস্ট্রিক্ট অব কলাম্বিয়ায় ১৮ কোটি ৬০ লাখ ভোটার ভোট দিতে পারবেন। তবে বেশির ভাগ রাজ্যে ডাকযোগে এবং আগাম ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা থাকায় ইতোমধ্যেই ৮ কোটির বেশি মানুষ ভোট দিয়ে ফেলেছেন।

ভোটের মহারণ শুরু হলেও সবার অপেক্ষা কার হাতে উঠছে হোয়াইট হাউসের চাবি। বিশ্বের সবচেয়ে প্রভাবশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র কি তার প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পাচ্ছে, নাকি দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ইতিহাস তৈরির হাতছানি ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সামনে। অপরদিকে গত নির্বাচনে পরাজয়ের গ্লানি মুছে প্রত্যাবর্তনের প্রত্যয় রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তবে জরিপগুলোতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস মিলছে।

হোয়াইট হাউজ দখলের লড়াইয়ে কে জয়ী হবেন, কে হাসবেন শেষ হাসি-কমলা হ্যারিস নাকি ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ প্রশ্নের জবাব পেতে এখন শেষ মুহূর্তের অপেক্ষা। অনেক ভোটার শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নেবেন। নীরব ভোটার আছেন অনেক। তাই ফলাফল প্রকাশের আগে কে জয়ী হবেন, তা অনুমান করা যাচ্ছে না।

ক্যালিফোর্নিয়ার এক সংগ্রামী নারী কমলা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে মার্কিন মুল্লুকের অন্যতম সেরা ধনকুবের ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কাছেই নয়; যুদ্ধবিগ্রহে বিধ্বস্ত বিশ্ব আর বিশ্ব অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থায় এবারের মার্কিন নির্বাচন বিশ্বের কাছেও তাৎপর্যপূর্ণ।

কমলা হ্যারিস-ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়াও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গ্রিন পার্টির জিল স্টেইন, লিবারটারিয়ান পার্টির চেইস অলিভার, স্বতন্ত্র প্রার্থী রবার্ট এফ. কেনেডি জুনিয়র (নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলেও এখনো বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যের ব্যালটে তার নাম রয়েছে) ও করনেল ওয়েস্ট (স্বতন্ত্র) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শুধু দেশটির নাগরিকরা ভোট দিতে পারেন। তাদের বয়স নির্বাচনের দিন বা তার আগেই ১৮ হতে হবে। পাশাপাশি, আবাসন সংক্রান্ত কিছু শর্ত মানতে হবে, যা একেক অঙ্গরাজ্যে একেক রকম।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ১৮ কোটি ৬০ লাখ আমেরিকান ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। অর্থাৎ, ভোট দেওয়ার বয়স হয়েছে এমন প্রতি ১০ আমেরিকানের মধ্যে ৮ জনই নিবন্ধন করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের পদ্ধতি বেশ জটিল। পপুলার ভোটে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। ৫০টি অঙ্গরাজ্য এবং ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া খ্যাত যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি মিলে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। নির্বাচনে জয়ী হতে হলে ২৭০টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট প্রয়োজন। একেক রাজ্যে একেক সংখ্যায় ইলেকটোরাল কলেজ ভোট আছে। যে রাজ্যে যে দল জয়ী হয়, সেই রাজ্যের সব ইলেকটোরাল কলেজ ভোট সেই দল পেয়ে যায়। অর্থাৎ উইনার্স গেট অল।

এবারের নির্বাচনে সাতটি সুইং স্টেটে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে। এসব সুইং স্টেটের মধ্যে উইসকনসিনে ১০টি, পেনসেলভিনিয়ায় ১৯টি, আরিজোনায় ১১টি, জর্জিয়ায় ১৬টি, মিশিগানে ১৫টি, নেভাদায় ৬টি এবং নর্থ ক্যারেলিনায় ১৬টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট রয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসির জন্য ইলেকটোরাল কলেজ ভোট তিনটি।

তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প বা কমলা হ্যারিস যেই হোয়াইট হাউসের বাসিন্দা হন তার উপরই নির্ভর করছে আগামী চার বছরের বৈশ্বিক ভূরাজনীতির ময়দানের মারপ্যাঁচ। আঞ্চলিক রাজনীতির পাশাপাশি বিশ্বরাজনীতির মোড় কোন দিকে ঘুরে যায় সেই সব কৌশলগত পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং ক্ষমতা প্রদর্শনীর বেষ্টনীর দেখা মিলবে আগামী চার বছরে। তবে বিশ্ববাসী ইতিবাচক ও সুশৃঙ্খল বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক ব্যবস্থাপনার স্বাগত জানাচ্ছে। যার শান্তির মশাল জ্বলবে সমগ্র বিশ্বে।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category