মৌমিতার শ্বশুর মশায়ের শরীরটা বেশ ক’দিন থেকেই ভালো যাচ্ছে না!
পারিবারিক ডাক্তার শুভেন্দু বাবু দেখে শুনে বলে গেলেন, তেমন কিছু না বয়স জনিত দূর্বলতা…..
খাওয়া দাওয়া ঠিক মত করতে হবে, তবে এ বয়সে দুধের চেয়ে ছানা খাওয়ায় ভালো!!
শাশুড়ি মা এক লিটার দুধের ছানা কেটে রাখলেন বিকেলে কিন্তু শ্বশুর মশাই এর এক গোঁ কিছুতেই ছানা খাবেন না!!
তা নাকি তার গলায় আটকে যায়।
রাগ করে পুরো ছানা ছোট্ট বক্সে ভ’রে ফ্রিজে তুলে রাখলেন মলিনা দেবী….
পরের দিন রান্নার সময় মৌমিতা ফ্রিজ খুলে এটা সেটা নিতে গিয়ে ছানার বক্সটি চোখে পড়তেই ভাবতে লাগলো কি করা যায়!
একবার ভাবলো ছানার কালিয়া রাঁধবে কিন্তু পরক্ষণেই ভাবলো গত সপ্তাহেই তো হয়েছিল এই পদটি, আজ বরং বিয়ের আগে মায়ের হাতের মিষ্টি আইটেম গোলাম জামুন/ কালো জাম করা যাক! যেই ভাবা সেই কাজ…..
প্রথমে ছানা ভালো করে মোথে ১টেবিল চামচ সুজি ২টেবিল চামচ দুধে ভিজিয়ে রাখলো, ১টেবিল চামচ ময়দা, ১চামচ বেকিং পাউডার, ১চা চামচ ঘি, ১ চা চামচ চিনি নিয়ে একসাথে মিশিয়ে সব উপকরণ ছানার সাথে খুব ভালো করে মেখে খানিকক্ষণ রেষ্টে রেখে দিল।
একটা পাত্রে এক কাপ চিনি দেড় কাপ জল দিয়ে জ্বাল করে সিরাপ তৈরি করে ঢেকে রেখে দিল।
এবার হাতে সামান্য ঘি মাখিয়ে গোল গোল করে ছোট বলাকারে গড়ে ডুবো তেলে লালচে করে ভেজে তুলে সেই সিরাপে ছেড়ে দিয়ে আবার ঢেকে রাখলো…..
সকালে জল খাবারের টেবিলে রুটি সবজি আর ডিম সেদ্ধ দেখে শ্বশুর মশাই ঠোঁট উল্টে মুখ ভেঙচিয়ে বলে উঠলেন নিত্যদিন এই রুগীর পথ্য খেতে খেতে জীবনটা একেবারে পানসে করে তুললে তোমরা বৌ- শাশুড়ি মিলে!
মৌমিতা মুচকি হেসে মিষ্টির বাটির ঢাকনা আলগোছে তুলে ধরতেই শ্বশুর মশাই এর চোখ চক্ চক্ করে উঠলো….
দাও দাও বৌমা আমার পাতে দুটো গোলাপ জাম দাও আগে …..
গপাস করে মুখে পুরেই বলে উঠলেন আহ্ শান্তি!!
অরিত্র (মৌমিতার বর) বলল , তা কাকে দিয়ে আনালে আর কখনই বা আনালে ?
মৌমিতা শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে বলল , মা আপনি একটা খেয়ে আগে বলুন না মা মিষ্টিটা কেমন!
এ তো দেখছি আমাদের মোড়ের দোকানের মিষ্টি মনে হচ্ছে…
মৌমিতা এবার সলাজ হেসে বলল মা এগুলো আমার বানানো, আপনার বানানো ছানা দিয়ে বানিয়েছি!!
অরিত্র বড় বড় চোখ করে বলে উঠলো এই রে এবার নির্ঘাত পাশের আনন্দ মিষ্টান্ন ভান্ডারের ভাত মেরেই ছাড়বে তুমি!!
Leave a Reply