অস্ট্রেলিয়ার ঋতুবৈচিত্র্যে এখন গরমকাল শেষের দিকে।চারদিকে চলছে মিশ্র আবহাওয়ার রদ-বদলের খেলা।কখনো রোদের তেজ তো আবার কখনো শ্রাবণ ধারা।আর আবহাওয়ার এই ভিন্নতায় সবচেয়ে বেশী প্রভাব পড়ে ত্বকের উপর।অতিরিক্ত গরমে ত্বক যেমন আর্দ্রতা হারায় তেমনি শুষ্ক হয়ে পড়ে। মানুষের ত্বকের ধরণ তিন প্রকারের হয়ে থাকে। স্বাভাবিক ত্বক, শুষ্ক ত্বক ও তৈলাক্ত ত্বক।রোদ ও ধূলোবালি সতেজ ত্বকের বড় শত্রু। রোদের প্রখরতায় পোড়াভাব ত্বকে খুব দ্রুত বসে যায়। লোমকূপগুলোতে ময়লা জমে মুখে ব্রণ হয় এবং রোদের ছোপ ছোপ দাগ পড়ে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায়।আবার কখনও কখনও শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুটি গুটি লাল দাগ হতেও দেখা যায়। ত্বক শুষ্ক হলে ত্বকের নমনীয়তা কমে যায় আর নমনীয়তা কমে গেলে ত্বকে ফাটল ধরে এবং বার্ধক্যের ছাপ ফুটে উঠে চেহারায়।
গরমে ত্বকের যত্নঃ
গরমের দিনগুলোতে ত্বকের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে বেশি সময় দিতে হয়। এজন্য সবচেয়ে উপকারী হলো গ্লিসারিন-সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজিং প্রসাধন সামগ্রী।তৈলাক্ত ত্বকের জন্য গরমকাল সবচেয়ে বেশি অসুবিধাজনক। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের তেলগ্রন্থিগুলো এ সময় সক্রিয় হয়ে উঠার কারণে তেল বের হয় বেশি তাই এ সময় স্যলিসাইলিক এসিডযুক্ত হাইড্র্যান্ট ফেইস ওয়াশ যা কিনা ত্বকের গভীর থেকে লোমকূপ পরিষ্কারে সাহায্য করে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে।
গরমে যা ভোলা যাবে নাঃ
গরমের দিনে সবচেয়ে প্রয়োজন হচ্ছে সানস্ক্রিন। রোদ থেকে রক্ষা পেতে বাইরে বের হলে অবশ্যই সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করা উচিত। রোদে বের হলেই বিশেষ করে চোখের নীচের নমনীয় ত্বকের জন্য মেডিকেটেড সানস্ক্রিন এবং তৈলাক্ত ত্বকের জন্য তেলবিহীন সানস্ক্রিনই ব্যবহার করতে হবে।
সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন তাতে যেন সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর অর্থাৎ এসপিএফ অন্তত ১৫ হয়। ওয়াটার প্রুফ সানস্ক্রিনও ব্যবহার করা যেতে পারে।এ ছাড়া সঙ্গে সানগ্লাস ও ছাতা নিতে ভুলবেন না।
শুধু শরীরের বাহ্যিক যত্ন করলেই হবে না প্রয়োজন অভ্যন্তরীণ যত্নেরও। গরমে সুস্থ থাকতে প্রচুর শাক-সবজি, ফলমূল এবং কমপক্ষে ১০-১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে।
এ সময়ে আমাদের পরিপাকতন্ত্র দুর্বল থাকে এ জন্য গুরুপাক খাবার এড়িয়ে চলুন। টক, ভাজাপোড়া এবং খুব বেশি গরম খাবার খাবেন না।
বাইরে যেহেতু ঘন ঘন মুখ ধোয়া সম্ভব নয় তাই সঙ্গে ফেসিয়াল টিস্যু রাখতে পারেন। কাজের ফাঁকে ফেসিয়াল টিস্যু দিয়ে মুখ মুছে নিলে নিজেকে অনেক ফ্রেশ ও সতেজ মনে হবে।
গরমে লেবুর শরবত বা যে কোনো প্রকার ঠান্ডা পানীয় হতে পারে স্বাস্থ্যের জন্য এক চমৎকার পথ্য। যে কোনো শরবতে একটু লবণ ও চিনি মিশিয়ে নিন। চিনি শক্তি জোগাবে আর লবণ পূরণ করবে আপনার শরীর থেকে ঘামের সাথে বেরিয়ে যাওয়া লবণের অভাব। লেবুতে থাকে ভিটামিন সি। এই গরমে ভিটামিন সি ফিরিয়ে দেবে আপনার লাবণ্যতা।
একমাত্র অভ্যাসের পরিবর্তনই পারে যে কোনো ঋতুতে শারীরিকভাবে নিজেকে সুস্থ ও প্রানবন্ত রাখতে।বিশেষ করে সুষম খাদ্যাভাস এবং শরীরের জন্য সঠিক নিয়ম মেনে চলা এই দুয়ের সংমিশ্রনেই সম্ভব আকর্ষণীয় ত্বকের অধিকারী হওয়ার পাশাপাশি নীরোগ জীবন পাওয়া।
Leave a Reply