টিনএজ পার করে দু বসন্তের মাঝে তোমাকে
প্রথম দেখি
সফেদ পোষাকে আড়াআড়ি টকটকে
লাল ওড়নায়
সবুজ ঘাসে দাঁড়িয়ে একজোড়া স্বপ্নচারী আঁখী।
ফাগুনের প্রথমভাগে
সামরিক উর্দির বেপরোয়া
বুটের
পদচারণার বিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ় শ্লোগান,
উচ্চারিত হচ্ছে ক্রমশ ধীরলয়ে
পুস্প প্রস্ফুটনের প্রথম প্রকাশ হয়ে,
বেড়ে উঠছে আমাদের প্রতিবাদী আহবান,
আহবান নিয়ে আমরা তখন মেতে উঠছি।
আমাদের তখন বন্ধের দিন নেই,
অবসন্ন বিকেল নেই,
বারান্দায় বসা ধোঁয়া ছড়ানো
চায়ের কাপ নেই।
আছে ধুম করে জেগে উঠা,
ইস্ত্রি বিহীন হাওয়াই শার্টের
বোতাম লাগাতে লাগাতে
বাসার গেইট চাপিয়ে দৌড়ানো,
মায়ের বারন শোনার আগেই
বেরিয়ে পড়া
শ্লোগান দেয়ার উত্তাল সময়।
আনন্দ মোহনের করিডোরে,
ক্যান্টিনে, বাংলা, ইতিহাস সেমিনারে
কৃষ্ণচূড়া চত্বরে।
ফেস্টুন ব্যানারে দেয়ালে স্পষ্টত লিখে দেয়া:
সামরিক উর্দির শিক্ষানীতি” মানি না, মানি না,”
রক্ত জবার চাষ হচ্ছে, অন্তরে।
পলাশ শিমুল রক্ত কণিকায় আগুন ছড়ায়
দ্রোহ জাগে মগজের অন্দরে,
স্পন্দিত বুক চিড়ে ভেসে আসে বিপ্লবী চেতনা।
নাসিরাবাদ থেকে মুমিনুন্নেসা,
পলিটেকনিক ছেড়ে মেডিকেল কলেজ
সকাল থেকে দুপুর, দুপুর গড়িয়ে বিকেল
বিষন্ন সন্ধ্যা পার করে আসে প্রসন্ন সকাল
শব্দ, সংগ্রাম,মিছিল মিছিল উত্তাল হরতাল।
সেই দ্রোহ সময়ে শুধু বিদ্বেষ ঘৃণা নয়,
কচি ঘাসে ভেজানো শিশির ছু্ঁয়ে,
তাতানো মধ্যাহ্নের মেজাজ মুছে,
আসে ভালবাসার সুবাসিত কাল।
লড়াইয়ে মিছিলে মুষ্টিবদ্ধ হাতে
মুমিনুন্নেসায়ও বক্তৃতা হয়
দুই চীপ বেয়ে নেমে আসে
লাজুক ঘাম
সারিবদ্ধ দাঁড়ানোর মাঝে
তোমার জোর করতালি
মুগ্ধতায় জানতে চাওয়া,
কি তোমার, নাম?
গোপনে তোমাকে কি
আঁখী নামে ডাকতাম!
মিছিল ভালবাসি বলে,
তোমায় ভালোবেসে ফেললাম।
তোমার ডাগর চোখ দেখিনি
ঝিলমিল চোখের ভাষা পড়েছি।
জানিনে,কি মোর গুণ, কি মোর দোষ
শুধু জেনেছি আদলে আদর বুলালে
জেগে উঠে নীরব মানুষ।
Leave a Reply