গত১৪ এপ্রিল রবিবার পহেলা বৈশাখে সিডনির মিন্টোস্থ রনমোর কমিউনিটি সেন্টারে দেবীপক্ষের কর্নধার জুঁই সেন পাল ও তার টীমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে আয়োজন করা হয় পহেলা বৈশাখের বিশেষ ভুড়িভোজ অনুষ্ঠানের।দেবী পক্ষ দ্বিতীয়বার আয়োজন করলো পহেলা বৈশাখের।
দেবীপক্ষের এই অসাধারন আয়োজনের মূল লক্ষ ছিল বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার খাবার দিয়ে আগত অতিথিদের আপ্যায়ন করা।আর সেই কারনেই প্রতিটি জেলার লোকেরা তাদের বিশেষ খাবার এখানে নিয়ে এসেছে।তবে ৬৪টি জেলার খাবার সহ প্রায় শতাধিক খাবারের আইটেম এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়েছে।
বিশিষ্ট ইভেন্ট প্ল্যানার কানিতাজ ইভেন্ট সল্যূশনের ডেকোরেশনে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গনে গ্রামবাংলার আদলে বানানো ফটোবুথ দেখে মনেই হচ্ছিলো না এটা হাতে বানানো কারুকাজ।এছাড়াও হলের গেটেই ছিল ৩৬০ ডিগ্রী ক্যামেরায় ফটো তোলার ব্যবস্থা, যাতে সবাই লাইন ধরেছিল ফটো ও ভিডিও করার জন্য।
ঠিক বিকেল পাঁচটায় জুঁইসেনের পরিচালনায় মংগল শোভাযাত্রার করা হয় আর তারপরই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরু হয়।
শুরুতেই ছোট্ট শিশু ফ্লোরা সেন পাল কান্ট্রি অফ একনলেজমেন্ট পাঠ করে এবং অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়।
মঞ্জুশ্রী মিতা ও শাহরীন রলির উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানের প্রথমে সকল শিশু শিল্পী ও বড়রা “এসো হে বৈশাখ এসো এসো” গানটি পরিবেশন করেন।গান শেষে ছোট্ট শিশু শিল্পীদের হাতে এপ্রিসিয়েশন সার্টিফিকেট তুলে দেয় সিডনির সর্বজন শ্রদ্ধেয় গামা কাদির, বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও সমাজ সেবী মোঃ শফিকুল আলম এবং আমাদের কথার প্রেসিডেন্ট পূরবী পারমিতা বোস।এর পর একে একে গান পরিবেশন করে প্রিতিশা, সুবর্না তালুকদার, মারিয়া মুন।নৃত্যে পরিবেশনায় ছিল আনিশা, আদ্রিতা, কলাংক ড্যান্স একাডেমি এবং শ্রেয়সীদাস ও তার নটরাজ ড্যান্স একাডেমী।আর একটি বাংলা গানের সাথে বিশেষ নাচে অংশগ্রহন করে ৪ জন অজি কিশোরী অন্বেষা, ইন্দিরা, এলা,সামান্তা।তাদের দূর্দান্ত পরিবেশনায় উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করে।
একটি রম্য নাটকে অংশ নেয় পলি ফরহাদ ও চঞ্চল ।এছাড়াও শিশুদের ও বড়দের দুটো মনোমুগ্ধকর ফ্যাশনশোও এই আয়োজনের বিশেষ আকর্ষন ছিল।
ছোটদের ফ্যাশন শো তে অংশ নেয় রাইমা রায়, অর্থদত্ত, আনিশা হালদার, প্রীতিশা হালদার, আয়ুশ সাহা, ফ্লোরাপাল, সম্প্রীতি বড়ুয়া চিত্রা এবং আরিশ দেব।আর বড়দের মাঝে ছিলেন জুঁই সেন পাল, অন্তরা ঐতী, মুনিরা সাথী, অরুনিমা কুন্ডু, সঞ্চিতা বিশ্বাস এবং শুভ্রা শিকদার।
দেবীপক্ষের এই অনুষ্ঠানে দুইজন নারীকে তাদের বাংলা কমিউনিটিতে ধারাবাহিক কাজের জন্য সম্মননা প্রদান করা হয়।তারা হলেন আমাদের কথার প্রেসিডেন্ট পূরবী পারমিতা বোস এবং ফাগুন হাওয়ার প্রেসিডেন্ট তিশা তানিয়া।আর এই সম্মাননা সরূপ উত্তরীয় ও ক্রেস্ট তাদের হাতে তুলে দেন ক্যাম্পবেল টাউন কাউন্সিলের কাউন্সিলর ডারসি লাউন্ড।
এছাড়াও বিশেষ সম্মাননা ক্রেস্ট ও উত্তরীয় দেয়া হয় অনুষ্ঠানের মূল স্পনসর বিশিষ্ট সমাজসেবী আফরীনা স্মৃতি, কিশোয়ার আক্তার কাকলি, প্যারামাউন্ট বিল্ডার্স এবং ড্রীম কী রিয়েল এস্টেট কে।সম্মাননা দিতে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন কাম্বারল্যান্ডের ডেপুটি মেয়র সুমন সাহা , ক্যাম্পবেল টাউন কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র মাসুদ খলিল, ক্যাম্পবেল টাউন কাউন্সিলের কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরী এবং কাউন্সিলর ডারসি লাউন্ড।
অনুষ্ঠানের বিশেষ আকর্ষন ৬৪ জেলার খাবার।প্রতিটি রান্নাই ছিলো অসাধারণএবং বৈচিত্র্যময়।সকলের আন্তরিকতা ও নিজ জেলার প্রতি ভালোবাসাই যেন ফুটে উঠেছে সকল রান্নার পাত্রগুলোতে।আর এই রান্না গুলো থেকেই বিশেষভাবে নির্বাচিত হয়েছে যে তিনটি রান্না সে তিনটি রান্নার রাঁধুনিদেরকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।দেবীপক্ষের কর্ণধার এবং অনুষ্ঠানের আয়োজক সৌরভ পাল, জুঁই সেন পাল সহ পুরষ্কার প্রদানে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন পূরবী পারমিতা বোস,তিশা তানিয়া,কামাল পাশা ও আশিকুর রহমান আ্যাশ।
তৃতীয়, দ্বিতীয় ও যুগ্নভাবে প্রথম পুরস্কার প্রদান করা হয় ৪জন কে।তারা হলেন তৃতীয় কানিজ ফাতেমা সানী(চ্যাপা পুলি/ময়মনসিংহ), দ্বিতীয় ফারাহানা ইয়াসমীন( পান্তুয়া/ফেনী) ও যুগ্মভাবে প্রথম হোন- উর্মী তালুকদার ও জয়শ্রী মন্ডল(চিংড়ী মালাইকারী/ঢাকা ও কই মাছের পাতুরী/ফরিদপুর)
সাদা লাল পোষাক পরিহিত নারী পুরুষ ও শিশুদের উপচে পরা ভীড়, হৈচৈ আনন্দ হাসি গান ফটোসেশন আর বিশেষ খাবারের সুঘ্রান মিলেমিশে যেন পুরো এক বাংলাদেশ ছড়িয়ে ছিল রনমোর কমিউনিটি সেন্টারে।সকলের মুখে ছিলো সফল অনুষ্ঠানের ভূয়সী প্রশংসা।আসছে বছর আবার জমবে ভূড়িভোজের আসর এটাই ছিল সবার ইচ্ছা।
জুঁই সেন পাল ও সৌরভ পাল সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন যখন তখন হলে প্রচুর লোকের সমাবেশ ছিল।এ যেন হইয়াও হইলো না শেষ অবস্থা।
উক্ত অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফীতে ছিলেন সিডনির বিশিষ্ট ফটোগ্রাফার কে দে আকাশ, সাউন্ডে ছিলেন সঞ্জয় টাবু, মিডিয়া পার্টনার ছিল “আমাদের কথা নিউজ পোর্টাল”, সাপোর্টিং পার্টনার “ফাগুন হাওয়া” এবং সার্বিক সহযোগীতায় ছিলেন দেবীপক্ষের সৈকত পাল এবং নন্দিতা পাল।
Leave a Reply