বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:১৮ অপরাহ্ন

টংক আন্দোলনের একমাত্র সাক্ষী কুমুদিনী হাজং আর নেই

Reporter Name
  • Update Time : শনিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৪
  • ২৬৭ Time View

ঐতিহাসিক টংক আন্দোলনের একমাত্র সাক্ষী নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার বহেরাতলী গ্রামের কুমুদিনী হাজং আর নেই।বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে আজ বিকাল তিনটায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।বর্ষীয়ান এই নেত্রীর বয়স হয়েছিল ১০২ বছর।

ব্রিটিশ শাসনামলে ঐতিহাসিক টংক আন্দোলন ও হাজং বিদ্রোহের সাক্ষী কুমুদিনী হাজং। নেত্রকোনার দুর্গাপুর সীমান্তে বহেরাতলী গ্রামের ১৯২২ সালে তাঁর জন্ম ও বেড়ে ওঠা। শেষদিন পর্যন্ত তিনি এই গ্রামেই ছিলেন মেজ ছেলে অর্জুন হাজং ও তাঁর পরিবার সাথে।

বৃটিশ আমলে সুসং দুর্গাপুরে টংক প্রথার প্রচলন ছিল। জমিতে ফসল হোক বা না হোক টংকের ধান জমিদারদের দিতেই হতো।না দিলে কৃষকদের ওপর জমিদাররা অত্যাচার, নির্যাতন করতেন।
১৯৩৭ সালে কমিউনিস্ট নেতা কমরেড মনি সিংহের নেতৃত্বে কৃষকরা এ প্রথার বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন শুরু করেন।

এই আন্দোলনে কুমুদিনী হাজংয়ের স্বামী লংকেশ্বর হাজং সক্রিয়ভাবে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৪৬ সালের ৩১ জানুয়ারি আন্দোলনকারীদের দমন করতে ব্রিটিশ সরকারের সশস্ত্র সেনারা লংকেশ্বরকে ধরতে তার বাড়িতে যায়।স্বামীর অবস্থান জানাতে না চাইলে সেনারা ক্ষিপ্ত হয়ে কুমুদিনী হাজংকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নারী নেত্রী রাশিমনি হাজংয়ের নেতৃত্বে শতাধিক হাজং নারী পুরুষ প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
ব্রিটিশ সেনাদের কাছ থেকে কুমুদিনী হাজংকে ছাড়িয়ে নিতে গেলে নৃশংসভাবে তাদের ওপর গুলি চালান সেনারা। এতে রাশিমনি হাজং, সুরেন্দ্র হাজংসহ বেশ কয়েকজন মারা যান।
সেনারা কুমুদিনী হাজংকে ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। আন্দোলনের মুখে ১৯৫০ সালে বিলুপ্ত হয় টংক প্রথা।

২০০০ সালে কুমুদিনীর স্বামী লংকেশ্বরের মৃত্যু হয়।বেসরকারি সংস্থা দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (ডিএসকে) নির্বাহী পরিচালক ও কমরেড মণি সিংহের ছেলে দিবালোক সিংহের তত্ত্বাবধানেডিএসকে থেকে কুমুদিনীকে মাসে পাঁচ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হতো।প্রতি মাসে একজন চিকিৎসক তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতেন বলে জানা যায়।

ঐতিহাসিক টংক আন্দোলন ও হাজং বিদ্রোহের
গৌরবের সংগ্রামী মুখ কুমুদিনী হাজং ছিলেন সুসংয়ের অহংকার।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category