সুদানের আল-ফাশার শহরে সাম্প্রতিক সহিংসতা থেকে হাজার হাজার পরিবার পালিয়ে আসার সময় শত শত শিশু বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রতিদিন শিশুরা পরিবার ছাড়া একটি শরণার্থী শিবিরে জোড়ো হচ্ছে।
গত অক্টোবরের শেষের দিকে আধাসামরিক র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) আল-ফাশারে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে শহরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। শত শত মানুষকে হত্যার পর ১ লাখেরও বেশি মানুষ পশ্চিম দারফুরের আল-ফাশার থেকে পালিয়ে যান।
জাতিসংঘের শিশু সুরক্ষা সংস্থা ইউনিসেফ ২৬ অক্টোবর থেকে ২২ নভেম্বরের মধ্যে শহরটি থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত তাওইলার একটি শরণার্থী শিবিরে ৩৫৪ জন শিশুর আগমন রেকর্ড করেছে, যাদের সঙ্গে পরিবারের কেউ ছিল না।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের বাবা-মা ‘নিখোঁজ’ হয়েছেন অথবা পথে আটক হয়েছেন কিংবা নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) ইউনিসেফ জানিয়েছে, গত মাসে ৮৪ জন শিশুকে তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলিত করা হয়েছে।
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল জানিয়েছে, কমপক্ষে ৪০০ শিশু তাদের বাবা-মা ছাড়া তাওইলায় পৌঁছেছে। কিছু শিশু তাদের বর্ধিত আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী এবং অপরিচিতদের সাহায্যে ক্যাম্পে যেতে পেরেছে।
রিফিউজি কাউন্সিল আরও জানায়, অনেক শিশু ক্ষুধার স্পষ্ট লক্ষণ নিয়ে এসেছিল; তারা অত্যন্ত রোগা ছিল। তারা এতটাই হাড়গোড়, পানিশূন্য যে, কিছু শিশু অস্থির, কেউ কেউ নিঃশব্দ বা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া, ক্রমাগত কান্নাকাটি করা, দুঃস্বপ্নের বর্ণনা দেওয়া বা মারামারি করাসহ মানসিক যন্ত্রণায় ভুগছে।
সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরএসএফ-এর সংঘাত শুরু হয়েছিল ২০২৩ সালে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, এই দীর্ঘ লড়াইয়ে কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ নিহত এবং ১ কোটি ২০ লক্ষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। তবে সাহায্যকারী গোষ্ঠীগুলো বলছে, প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা অনেক গুণ বেশি হতে পারে।
আরএসএফ মূলত আরব জানজাউইদ যোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত। এরা ২০০০-এর দশকে দারফুরে তৎকালীন সরকার-সমর্থিত এক গণহত্যা অভিযানে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ রয়েছে – সেই সময় প্রায় ৩ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিল।