একুশে একাডেমী অস্ট্রেলিয়ার আয়োজনে গত ৩ মার্চ রবিবার অ্যাশফিল্ড পার্কে বরাবরের মতই সারাদিনের জন্য জমেছিল সিডনি একুশের বইমেলা। এবার একুশে একাডেমী আয়োজন করলো তাদের ২৫তম বইমেলার ।২০০৬ সালে সিডনির অ্যাশফিল্ড পার্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের পর থেকেই আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে সামনে রেখে গত ২৫ বছর ধরে একুশে একাডেমী অমর একুশ উদযাপন এবং বইমেলার আয়োজন করে আসছে।এবারের আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে এসেছেন বিশিষ্ট কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক।
কথা সাহিত্যিক আনিসুল হকের নেতৃত্বে প্রভাত ফেরীর মধ্য দিয়ে সকালে বইমেলার শুরু হয়। এ সময় অ্যাশফিল্ড পার্কে উপস্থিত অস্ট্রেলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশিরা বইমেলা প্রাঙ্গণ প্রদক্ষিণ করে ভাষা শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। সিডনি ও সিডনির বাইরের প্রবাসী বাঙালি সহ প্রায় ২৫টি সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এতে অংশ গ্রহন করেন।প্রভাত ফেরী পর পরই আনিসুল হক বই মেলারও উদ্বোধন করেন।মেলায় বইয়ের স্টলের পাশাপাশি ছিল নানারকম মুখোরোচক খাবারের স্টল ও মেলা প্রাঙ্গনে ছিল একুশের মঞ্চ।সারদিন মঞ্চে পর্যায়ক্রমে পরিবেশিত হয়ছে শিশু কিশোরসহ স্থানীয় শিল্পী, বাংলাদেশের আদিবাসি শিল্পগোষ্ঠী ও একুশে একাডেমীর নিজস্ব শিল্পীদের দলীয় ও একক গান, নাচ, কবিতা ও শ্রুতি নাটক ।মেলার সারাটা সময় জুড়ে কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক বিভিন্ন স্টল ঘুরে পাঠক ও ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে, অটোগ্রাফ দিয়ে ও ছবি তুলে ব্যস্ত সময় কাটান।
প্রবাসী লেখক ডঃ শাখাওয়াত নয়নের উপস্থাপনায় সিডনি প্রবাসী ১২ জন লেখকের বইয়ের মোড়ক উম্মোচিত হয় একুশের মঞ্চে।বইমেলা উপলক্ষে শাখাওয়াত নয়নের সম্পাদনায় ‘মাতৃভাষা’ নামে একটি ম্যাগাজিনও প্রকাশিত হয়।
সেই সাথে মঞ্চে সাহিত্যিক আনিসুল হকের সাথে সিডনির প্রখ্যাত কলামিস্ট অজয় দাশগুপ্তের কথাপোকথন পর্বও বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
প্রথম বারের মতো ‘ভাষা দিবস আজীবন’ সম্মাননা লাভ করেন সিডনি বইমেলার প্রতিষ্ঠাতা নেহাল নেয়ামুল বারী, ‘ভাষা দিবস’ সম্মাননা লাভ করেন প্রখ্যাত কথা সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আনিসুল হক ও শ্রাবন্তী কাজী। এদের সবাই অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মান্যবর আল্লামা সিদ্দীকির হাত থেকে সম্মাননা গ্রহন করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কনস্যূলেট জেনারেল সিডনির মোঃ সাখাওয়াৎ হোসেন, অস্ট্রেলিয়ার সম্মানিত এমপি মার্ক কূরী সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি গন ।
বইমেলার আয়োজক একুশে একাডেমি অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি প্রকৌশলী আবদুল মতিন ও তার টিম।এবারের বইমেলার প্রধান পৃষ্ঠপোষকতা করেন সিডনি থেকে প্রকাশিত প্রভাত ফেরী পত্রিকা ও তার প্রধান সম্পাদক শ্রাবন্তী কাজী ও বিশিষ্ট উদ্যোক্তা সুলায়মান আশরাফি দেওয়ান।
একুশে একাডেমীর এই আয়োজন প্রবাসী বাঙালি লেখক,পাঠক ও দর্শকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।প্রতি বছর এই মেলার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকা বাঙালিরা তাই এই মেলাকে প্রাণের মেলা নামেই সম্বোধন করেন।
একুশে একাডেমীর দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষনা করেন সংগঠনের সহ সভাপতি ডঃ সুলতান মাহমুদ।তার আগে তিনি মেলায় উপস্থিত সকলকেই একুশে একাডেমীর পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং একুশে একাডেমীর প্রথা অনুযায়ী ২০২৫ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিতব্য বই মেলার আগাম ঘোষনা দেন।
Leave a Reply